নির্মীয়মাণ আবাসনে কেন বারবার বল? দুই কিশোরকে বেদম মার
বর্তমান | ০৫ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নির্মীয়মাণ আবাসনের পাশের মাঠে ক্রিকেট খেলছিল এক দল কিশোর। খেলার সময় কয়েকবার বল ঢুকে যায় সেই আবাসন চত্বরে। বেশ কয়েকবার তারা সেখান থেকে বল খুঁজেও এনেছে। একবার বল আনতে গিয়ে নির্মীয়মাণ ভবনের চারতলায় উঠে যায় চার কিশোর। তখনই তাদের বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠল ওই নির্মাণের প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার পূর্ব পুঁটিয়ারিতে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাণতোষ সাহা নামে প্রোমোটারকে রাতেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব পুঁটিয়ারির তরুণ দল ক্লাবের পাশের মাঠে শনিবার বিকেলে ক্রিকেট খেলছিল পাঁচ-ছ’জন কিশোর। পাশেই একটি বহুতল নির্মাণের কাজ চলছে। সবুজ মিস্ত্রি নামে আক্রান্ত কিশোর জানায়, খেলার সময় কয়েকবার বল সাইটের ভিতরে চলে গিয়েছিল। সেখানে ঢুকে বল খুঁজে এনেছে তারা। কিন্তু একবার বল সহজে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন তারা চার বন্ধু সাইটের ভিতরে ঢোকে। নির্মীয়মাণ বহুতলের চারতলা পর্যন্ত উঠে খোঁজ করার পরও বল পাওয়া যায়নি। তারা নেমে আসছিল। প্রোমোটার প্রাণতোষ তখন ছিলেন একতলায়। স্থানীয়দের দাবি, তিনি সেখানে মদ্যপানে ব্যস্ত ছিলেন। চার কিশোরকে নামতে দেখে চোর বলে সন্দেহ হয় তাঁর। বাঁশ নিয়ে তেড়ে যান। দু’জন দৌড়ে পালাতে পারলেও মারমুখী প্রোমোটারের সামনে পড়ে যায় সবুজ মিস্ত্রি ও অয়ন মণ্ডল নামে দুই কিশোর। প্রোমোটার তাদের বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। অয়নের বাঁ পায়ে হাঁটুর নীচে আঘাত লাগে। সবুজ বাঁ হাতে জোরালো আঘাত পান। কোনওক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচে তারা। বাড়িতে এসে গোটা ঘটনা জানায় তারা। খবর পেয়ে সেখানে চলে আসেন স্থানীয় ক্লাবের সদস্যরা। তাঁরাই রিজেন্ট পার্ক থানায় খবর দেন। পুলিস এসে দুই কিশোরকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ছেড়েও দেওয়া হয়। প্রোমোটারের বিরুদ্ধে মারধরের মামলা রুজু হয় রিজেন্ট পার্ক থানায়। পুলিস অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। সূত্রের খবর, তদন্তকারীদের ধৃত জানিয়েছেন, ওই সাইটে প্রায়শই চুরির ঘটনা ঘটছে। ওই কিশোরদের চোর সন্দেহ করেই বাঁশ নিয়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। দু’জন পালিয়ে যাওয়ায় সন্দেহ আরও বাড়ে। দু’জনকে মারধর করেন তিনি। কিন্তু হাতে ক্রিকেট ব্যাট থাকার পরেও কীভাবে তাদের চোর ভাবা সম্ভব, তার কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ধৃত। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ক’দিন আগেও এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল এই প্রোমোটারের বিরুদ্ধেই। প্রভাবশালী মহলে ওঠাবসা থাকায় এসবের কোনও প্রতিকার হয় না বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁদের দাবি, ওই এলাকায় এই প্রোমোটারকে আর কোনও নির্মাণকাজ করতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।