• মেজর-কর্নেল পরিচয়ে সেনায় নিয়োগের নামে ৬ লক্ষ টাকার প্রতারণা, ধৃত ১
    বর্তমান | ০৫ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সেনাবাহিনীর দুই পদস্থ কর্তা! একজন মেজর, অন্যজন কর্নেল! সেনার ইউনিফর্ম পরে চলাফেরার সময় তাঁদের ঘিরে থাকত দেহরক্ষীরা। চৌকস হিন্দি ও ইংরেজিতে কথাবার্তা চালাতেন। সবাই জানত, ফোর্ট উইলিয়ামে উঁচু পদে ‘পোস্টিং’ তাঁদের! বেকার যুবকদের সেনায় চাকরি পাইয়ে দিতে বিভিন্ন মাঠে দৌড়ের পরীক্ষা নিতেন তাঁরা। তারপর দমদম ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালে মেডিক্যাল করানো হতো চাকরিপ্রার্থীর। হোয়াটসঅ্যাপে চলে যেত নিয়োগপত্র! আদতে পুরোটাই একটি প্রতারণা চক্র। উত্তরপ্রদেশের এক চাকরিপ্রার্থীকে এভাবে প্রতারণার অভিযোগে শনিবার হেস্টিংস থানা গ্রেপ্তার করে একজনকে। তবে চক্রের মূল পান্ডা তথা স্বঘোষিত কর্নেল-মেজর এখনও অধরা। 

    সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের ওই বাসিন্দা গত এপ্রিলে টেলিগ্রামে একটি মেসেজ পান। সেখানে বলা হয়েছিল, সেনাবাহিনীতে প্রচুর নিয়োগ হবে। অভিযোগকারী নিজেই সেনায় চাকরি পেতে ইচ্ছুক বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দেন উত্তরপ্রদেশে। ওই মেসেজে থাকা নম্বরে ফোন করে তিনি নিজের খুড়তুতো ভাই ও এক বন্ধুকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেন। তখন তাঁকে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম লাগোয়া এলাকায় আসতে বলা হয়। সেখানে পৌঁছলে গাড়ি নিয়ে সেনার পোশাকে হাজির হন এক ব্যক্তি। তাঁর বুকে থাকা ব্যাজে লেখা ছিল ‘মেজর’। তাঁকে ঘিরে ছিল আরও তিনজন। তাঁরাও নিজেদের সেনা অফিসার বলে পরিচয় দেন। ঠিক হয়, খুড়তুতো ভাইয়ের চাকরির জন্য অভিযোগকারীকে ছ’লক্ষ টাকা দিতে হবে। এই টাকা নগদে ও অনলাইনে ধাপে ধাপে মেটানো যাবে। চাকরিপ্রার্থীর শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়া হয় কলকাতা ময়দানে। কয়েকদিন পর যুবককে ফোন করে দমদম ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালে আসতে বলা হয় মেডিক্যালের জন্য। সেই পর্ব মিটলে যুবকের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ‘নিয়োগপত্র’। সেই সঙ্গে আরও চার লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। শনিবারের মধ্যে এই টাকা দিতে হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু নিয়োগপত্র দেখে সন্দেহ হয় অভিযোগকারীদের। বুঝতে পারেন, প্রতারকের খপ্পরে পড়েছেন। শনিবারই তাঁরা হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীকে পুলিস তাদের সামনেই প্রতারকদের ফোন করতে বলে। সেই মতো ‘মেজর’ পরিচয়ে হাজির হওয়া ব্যক্তিকে ফোন করে অভিযোগকারী জানান, দাবি অনুযায়ী টাকা দিতে তাঁরা প্রস্তুত। ঠিক হয়, হেস্টিংস থানা এলাকায় টাকা নিতে আসবেন একজন। পুলিসের টিম আগে থেকে পৌঁছে যায়। এক যুবক সেখানে আসামাত্র পাকড়াও করে পুলিস। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাঁর নাম শাহজাদ। গার্ডেনরিচ এলাকার বাসিন্দা ওই যুবককে টাকা নিতে পাঠিয়েছিলেন চক্রের মূল পান্ডারা। ভুয়ো মেজর-কর্নেল সহ এই কারবারে জড়িত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।   
  • Link to this news (বর্তমান)