• মুখ্যমন্ত্রীর মুর্শিদাবাদ সফর শুরুর আগে বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার মাঠে বসানো হলো সেনাবাহিনীর অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক ...
    আজকাল | ০৫ মে ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার রাতে মুর্শিদাবাদ  জেলায় এসে পৌঁচচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তারপরের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে বহরমপুর স্কোয়ার ফিল্ডের  হেলিপ্যাড থেকে তিনি সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। 

    কিন্তু তার আগেই রবিবার রাতে বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার মাঠে বসে গেল অত্যাধুনিক টি-৭২ যুদ্ধ ট্যাঙ্ক। রাতের অন্ধকারে ক্রেন দিয়ে টি -৭২ ট্যাঙ্কটিকে মাঠে  নিয়ে আসতে দেখে অনেকেই মনে করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর হেলিকপ্টারের নিরাপত্তার জন্য সম্ভবত এটিকে আনা হয়েছে। 

    তবে ভুল ভাঙিয়েছেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। জেলার এক শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিক জানিয়েছেন, মূলত জেলাশাসকের উদ্যোগে বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার মাঠের সৌন্দর্যায়নের অঙ্গ হিসেবে ভিন রাজ্য থেকে এই ট্যাঙ্কটিকে আনা হয়েছে। এখন থেকে ব্যারাক স্কোয়ার মাঠে চার কোণে চারটি কামানের সঙ্গে মাঠের শোভা বর্ধন করবে এই ট্যাঙ্কটি। 

    ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে জানা যায়, ১৭৬৫ সালে ইংরেজরা বাংলা-বিহার-ওড়িশার তৎকালীন নবাব মীরজাফরের কাছ থেকে 'সুবা বাংলা'র নতুন ক্যান্টনমেন্ট তৈরি করার জন্য প্রায় ৪০ একর জায়গা নিয়েছিল। বর্তমানে বহরমপুর শহরের ঠিক কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ব্যারাক স্কোয়ার মাঠকে কেন্দ্র করে বাংলার নবাবের কাছ থেকে জমি পাওয়ার মাত্র দু'বছরের মধ্যেই ১৭৬৭ সালে ব্রিটিশ সরকার তৈরি করে ফেলেছিল এক নতুন ক্যান্টনমেন্ট। 

    সবুজ গাছপালা ঘেরা এই মাঠের চারপাশে আজও রয়েছে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত অনেক বাংলো এবং ব্যারাক, যা বর্তমানে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক সহ অন্য উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মীদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 

    বহু ঐতিহাসিক দাবি করেন, ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রান্তে সিপাহী বিদ্রোহ শুরু হওয়ার বেশ কয়েক মাস আগেই ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৭ সালে বহরমপুরে মোতায়ন থাকা  ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ১৯ দেশীয় রেজিমেন্টের জওয়ানরা প্রথম প্রথম ব্রিটিশ  সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। শোনা যায় সেই দিনই ব্যারাক স্কোয়ার মাঠের চার কোণে থাকা কামানের সামনে একাধিক বিদ্রোহী সেনাকে দাঁড় করিয়ে হত্যা করেছিল ব্রিটিশ বাহিনী। সেই ঐতিহাসিক মাঠে এবার বসে গেল যুদ্ধ ট্যাঙ্ক। 

    বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখার্জি বলেন,' মূলত জেলাশাসকের উদ্যোগে ভিন রাজ্য থেকে সেনাবাহিনীর বাতিল এই ট্যাঙ্কটিকে আনা হয়েছে।যুদ্ধ ট্যাঙ্কটিকে বহরমপুর কোর্ট বাজার সংলগ্ন এলাকায় বসানো হচ্ছে।' তিনি জানান,' যুদ্ধ ট্যাঙ্কটিকে রক্ষণাবেক্ষন , রং করা এবং তার চারপাশ ঘিরে দেওয়ার যাবতীয় কাজ পুরসভার তরফ থেকেই করা হবে। আগামী দিন যুদ্ধ ট্যাঙ্কটিকে দেখার জন্য ওই মাঠে মানুষের ভিড় বাড়তে পারে এবং প্রচুর মানুষ ট্যাঙ্কের সঙ্গে সেলফি তোলার জন্যও মাঠে আসতে পারেন। '  

    পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন,' বহরমপুর ব্যারাক স্কোয়ার মাঠ এবং লালদিঘি বহরমপুর শহরের সম্পদ।  এই সম্পদ রক্ষা করার জন্য পুরসভা প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ করে সৌন্দর্যায়ন, সংস্কার এবং অত্যাধুনিক আলো বসানোর কাজ করছে। ট্যাঙ্ক বসে যাওয়াতে ঐতিহাসিক এই মাঠের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পেল।'
  • Link to this news (আজকাল)