আমদানি এবং রফতানি বাণিজ্য ধাক্কা খাওয়ার কারণে ২০২৪ সালে সারা দেশেই বিভিন্ন বন্দরে কমেছিল পণ্য ওঠানামার পরিমাণ। আনুষঙ্গিক একাধিক কারণ ছাড়াও কলকাতা তথা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য হারে কয়লা আমদানি হ্রাস পাওয়ায় বন্দরে পণ্য ওঠানামা বিশেষ ভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির চাহিদা কমে যাওয়ায় বিদেশ থেকে হলদিয়া ডক ছাড়াও কলকাতায় পণ্য ওঠানামা হ্রাস পায়।
এমন অবস্থা থেকে গত এপ্রিলে ঘুরে দাঁড়িয়ে এক মাসের মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ পণ্য ওঠানামা বাড়িয়েছে কলকাতা বন্দর। সারা দেশের মধ্যে অন্যান্য সব বন্দরের সাপেক্ষে এই বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন বন্দরের শীর্ষ কর্তারা। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ৪১.০৬ লক্ষ টন পণ্যের তুলনায় চলতি বছরে ওই একই সময়ে ৫৯.৬৭ লক্ষ টন পণ্য ওঠানামা হয়েছে কলকাতা বন্দরে।
এর মধ্যে হলদিয়া ডক গত বছরের ২৯.৯৩ লক্ষ টনের জায়গায় এ বার ৪৩.৬৩ লক্ষ টন পণ্য ওঠানামা করতে সমর্থ হয়েছে। অন্য দিকে, কলকাতা বন্দর ১১.১৩ লক্ষ টনের জায়গায় ১৬.০৪ লক্ষ টন পণ্য ওঠানামা সামাল দিয়েছে। দু’জায়গার ডক মিলিয়ে কলকাতা বন্দরের অগ্রগতির হার ৪৫ শতাংশেরও বেশি বলে জানিয়েছেন বন্দরের সিনিয়র জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। এ ছাড়াও ভোজ্য তেল, পেট্রোলিয়াম, এলপিজি, রাসায়নিক সার, ম্যাঙ্গানিজ়, কোক-সহ আরও নানাবিধ পণ্যের ওঠানামা বেড়েছে বলে বন্দর সূত্রের খবর।
বন্দরের চেয়ারম্যান রথেন্দ্র রমন এই সাফল্যের জন্য কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। জাহাজ মন্ত্রক পূর্ব ভারতে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কলকাতা বন্দরের উপরে বিশেষ ভাবে আস্থা রেখেছে বলে খবর।
এর পাশাপাশি, বন্দরে প্রযুক্তির ব্যবহারে আগামী দিনে জাহাজের যাতায়াত আরও বাড়বে বলেই জানাচ্ছেন শীর্ষ কর্তারা। বন্দরের কর্মী, আধিকারিক এবং পাইলটদের তৎপরতায় বিভিন্ন জায়গায় নদীপথে ভাসমান বয়ায় উপযুক্ত আলো ব্যবহার করে নাইট নেভিগেশন প্রযুক্তি চালু করা গিয়েছে। এর ফলে দিনে ও রাতে বন্দরে জাহাজ আসার সংখ্যা বাড়বে। এর ফলে কলকাতা এবং হলদিয়া, দু’জায়গার ডকেই পণ্য ওঠানামা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকরা।