দিব্যেন্দু সিনহা, জলপাইগুড়ি
থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের কথা চিন্তা করে এবার ডে কেয়ার ইউনিটি চালু করতে চলেছে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ। জেলায় এই প্রথম এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। যে সমস্ত থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুকে প্রতি মাসে রক্ত নিতে হয় তাদের শিশু বিভাগে ভর্তি হতে হয়। আবার ভর্তি হয়ে রক্ত নিয়ে বাড়ি যাওয়া পর্যন্ত তাদের দু’দিন চলে যায়। এতে রোগী ও তার পরিজনদের অনেকটা সময় নষ্ট হয়। সেই সমস্যা মেটাতেই এই ইউনিট করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইমার্জেন্সিতে চালু করা হবে এই ইউনিট। যেখানে পাঁচটি বেড ছাড়াও থাকবে অন্য পরিষেবা। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি কল্যাণ খাঁ বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের রক্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এ বার থেকে আর হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে না। আগামী ৮ মে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবসে ইউনিটটি চালু করা হবে।’
থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে কাজ করে চলেছে জলপাইগুড়ি থ্যালাসেমিয়া কন্ট্রোল ইউনিট। সুত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত জেলায় ১৪ হাজার রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৯৩৬ সংখ্যক থ্যালাসেমিয়া ক্যারিয়ারের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়া জেলাজুড়ে ১ হাজার ২৩ জন অ্যাক্টিভ রোগী রয়েছে, যাদের প্রতিমাসে রক্ত নিতে হয়। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমানে পেডিয়াট্রিক আউটডোরে সপ্তাহে দু’দিন করে পরিষেবা পাবে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তেরা। সেখানে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ২০ জন রোগী রক্তের জন্য আসে। শুধু তাই নয়, রক্ত নিতে গেলে তাদের হাসপাতালে ভর্তিও থাকতে হয়।
এমএসভিপি আরও বলেন, ‘ডে কেয়ার ইউনিট চালু হয়ে গেলে দু’দিনের কাজ এক বেলায় মিটে যাবে। ওই ইউনিটে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ছাড়াও উপযুক্ত নাসিং স্টাফদের দায়িত্বে রাখা হবে। আপাতত সপ্তাহে বুধ ও বৃহস্পতিবার এই পরিষেবা চালু হবে।’ পাশাপাশি তিনি জানান, ২০১৬–র বিশেষ ভাবে সক্ষমদের অধিকার সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্নের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। সেই সার্টিফিকেটের মাধ্যমে তারা যে কোনও সরকারি জায়গা থেকেই চিকিৎসা পরিষেবা নিতে পারেন।