'আপনারা দাঙ্গা করছেন, গালাগালি খাচ্ছি আমি,' মুর্শিদাবাদে বড় হুঁশিয়ারি মমতার
আজ তক | ০৫ মে ২০২৫
মুর্শিদাবাদের অশান্তি আদতে পরিকল্পিত এবং তা নিয়ে শীঘ্রই সত্য তথ্য প্রকাশ করবে রাজ্য সরকার। হিংসার ঘটনার তিন সপ্তাহ পর মুর্শিদাবাদে পা রেখে এ কথাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'মুর্শিদাবাদের মাত্র দু'টো পার্টে গন্ডোগোল হয়েছিল। কারা ঘটিয়েছে, কী ঘটেছিল আমি এতদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করেছি। সত্য-তথ্য হাতে এলেই সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করা হবে।'
মুর্শিদাবাদে বহিরাগতরা এসে অশান্তি তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য করেন মমতা। তাঁর কথায়, 'বহিরাগতরা এসে ধর্মের নামে বিধর্মী কথা বলেছে। কয়েকজন বিরাট ধর্মীয় নেতা সেজেছেন। তাঁরা পালে বাঘ না পড়লেও রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য বাঘ বাঘ বলে চিৎকার করে। তাঁরাই কিন্তু দাঙ্গা লাগিয়ে সবার আগে পালিয়ে যায়। এরা গৃহশত্রু, বাংলার শত্রু।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোজন, 'দু'তিনটে লোক আছে যারা এই গন্ডগোল পাকাচ্ছে। তারা নাকি বিরাট বিরাট ধর্মের নেতা। ধর্মের নামে বিধর্মী কথা বলে বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলেছে। আর কিছু লোক প্ররোচিত হওয়ার ফলে এক গোষ্ঠী আর এক গোষ্ঠীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।'
মুর্শিদাবাদের হিংসা পরিকল্পিত এবং চক্রান্ত করে করা হয়েছে বলে দাবি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, 'ঘটনা ঘটার পরদিনই মানবাধিকার কমিশন চলে এল? কই মণিপুর, রাজস্থান, ওড়িশাতে তো যায়নি! দিল্লির দাঙ্গায় এত লোক মারা গেল, সেখানে তো যায়নি। মনে আছে, নোটবন্দির পরদিনই পেটিএমের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছিল। সেইরকম প্ল্যান করে মুর্শিদাবাদের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।'
হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের লুকিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মমতা। তিনি বলেন, 'আমি প্রতিশ্রুতি মতো পরিবারের হাতে ১০ লক্ষ টাকা করে তুলে দিতাম। কিন্তু তাঁদের লুকিয়ে নিয়ে যাওয়া হল কেন? এটা কিডন্যাপিং নয়? তাঁদের দিয়ে আমাকে গালাগালি করানো হয়েছে। আপনারা দাঙ্গা করাচ্ছেন আর গালাগালি খাচ্ছি আমি!'
বাংলার মানুষ এসব বরদাস্ত করবে না বলে আবারও স্পষ্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী। ধর্মের নামে কোনও চক্রান্ত বা বিভাজন তৈরির চেষ্টা এ রাজ্যে চলবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে ফের প্রশ্ন তোলেন তিনি। মমতা বলেন, 'আপনারা দাঙ্গা করছেন আর গালাগালি খাচ্ছি আমি। বিএসফ কেন গুলি চালিয়েছিল? গুলি না চালালে পরেরদিনের ঘটনা ঘটত না। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। দু'টো মসজিদের ইমামকে ফোর্স করা হয়েছিল বলে যদি দাবি করা হয় তাহলে এখানে সেবাশ্রমের কুর্কীর্তির কথাও সকলে জানে। বেলডাঙা থেকে সুতি, ধুলিয়ান সর্বত্র কী করা হয়েছে জানি। আমায় দুর্বল ভাববেন না। যখন ওয়াকফ নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল তখন একজন ৪৮ ঘণ্টা আলো নিভিয়ে দিয়েছিলেন। এটা করা যায় না। দণ্ডনীয় অপরাধ। কী লুকোতে চেয়েছিলেন আপনারা?'
অমিত শাহের নাম না করেও এদিন তাঁকে একহাত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'প্লিজ টেক কেয়ার অফ ইন্ডিয়া। কে অ্যাক্টিং প্রাইম মিনিস্টার সকলে জানেন। দাঙ্গা না করিয়ে সীমান্তে নজর দিন।'