মনরঞ্জন মিশ্র: অবশেষে বন দফতরের ঘুম পাড়ানি ওষুধে কাবু হলো খুনি বুনো দাঁতাল। ক্রেনের মাধ্যমে লরিতে তুলে হাতিটিকে অন্যত্র সরানোর উদ্যোগ নিল বনদফতর। রবিবার রাতে পুরুলিয়ার মানবাজার ১ নম্বর ব্লক এলাকার হাতিপাথর সংলগ্ন জঙ্গলে বাগে আনা হয় হাতিটিকে।
গতকাল বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়ার পুঞ্চা এলাকায় লোকালয়ে ঢুকে পড়ে দলছুট বুনো দাঁতালটি। সেখানে হাতির হানায় মৃত্যু হয় বাহাদুর মাহাতো নামে (৭৫) নামে পুঞ্চা এলাকার এক বৃদ্ধের। এরপর হাতিটি পুঞ্চা থেকে মানবাজার ১ নম্বর ব্লক এলাকার জঙ্গলে প্রবেশ করে। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় পুঞ্চা ও মানবাজার এলাকায়। এলাকায় মোতায়েন করা হয় বনকর্মীদের। দিনভর মাইকিং করে সচেতনতার প্রচার চালান হয়। ওই হাতিকে কাবুতে করতে হিমসিম খেতে বনবিভাগকে।
পরে তিনটি ট্রানকুলাইজার টিম মোতায়েন করা হয় এলাকার জঙ্গলে। পুরুলিয়ার কংসাবতী উত্তর ও দক্ষিণ বনবিভাগ এবং বাঁকুড়া বনবিভাগ যৌথ ভাবে অভিযান চালায়। সেখানে আনা হয় হুলা পার্টির সদস্যদেরও। দিনভর চেষ্টা চালানোর পর রাতের দিকে ট্রানকুলাইজার টিমের সদস্যদের ঘুম পাড়ানি গুলিতে কাবু হয়ে হাতিটি। তারপর ক্রেনে করে লরিতে চাপিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হাতিটিকে।
আগেই লোকালয়ে হাতির হানার খবর এসেছিল। এই ঘটনায় জখম হয়েছিলেন এক বৃদ্ধ। তাঁর মৃত্যুর খবরও পাওয়া গিয়েছিল। যে খুনি হাতির জন্য তাঁর মৃত্যু, সেই খুনি হাতিকে অবশেষে বাগে আনতে পেরেছে বনদফতর। তাকে ঘুম পাড়ানি ওষুধ দিয়ে তবে বাগে আনতে পেরেছে বনকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, লোকালয়ে হাতির হানার ঘটনাটি ঘটে পুরুলিয়ার পুঞ্চা এলাকায়। দলছুট বুনো হাতির আতঙ্ক দানা বেঁধেছিল এলাকায় । সেদিন সকালে দেখা যায় পুঞ্চা বাজার সংলগ্ন ব্লক মাঠে হাতির উপস্থিতি পাওয়া যায়। ওই হাতির পায়ের ছাপ দেখে এলাকাবাসীরা গতিবিধির উপর নজর রাখেন।
হাতি যাওয়ার রাস্তায় এক ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিকে জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসীরা। তড়িঘড়ি বৃদ্ধকে উদ্ধার করে প্রথমে পুঞ্চা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং পরে বাঁকুড়াতে নিয়ে যাওয়া হয়।
অবশেষে খবর এসেছিল হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল ওই বৃদ্ধকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। সেই খুনি হাতিকে অবশেষে ধরে ঘুমপাড়ানি ওষুধে কাবু করে ধরে বনদফতরের কর্মীরা।