সুব্রত বিশ্বাস: হাওড়া থেকে চলাচলকারী সব ট্রেনের ব্রেক ভ্যানকে তুলে দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি সংস্থার হাতে। প্রতিবাদে হাওড়ায় পার্সেল বুকিং বন্ধ রেখেছেন এজেন্টরা। যার জেরে সপ্তাহের প্রথম দিন সকাল থেকে হয়রানির মুখে পড়লেন যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা। পূর্বা, ফলকনামা, যশবন্তপুর স্পেশাল ট্রেন-সহ বহু ট্রেনে পণ্য বুকিংহীন অবস্থায় রওনা দিয়েছে। এতে রেলের আর্থিক ক্ষতিও প্রচুর। ডিআরএম সঞ্জীব কুমার বলেন, পলিসি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত। তবে পরিস্থিতি বিচার করা হচ্ছে। কী করা যায় তা দেখা হচ্ছে।
এতদিন সামনে ও পিছনের ব্রেক ভ্যান দু’টির মধ্যে সামনেরটি লিজে দেওয়া হলেও পিছনেরটি ছিল রেলের হাতে। যা আগামী ৮ মে টেন্ডারের মাধ্যমে লিজে দেওয়া হবে। যার প্রতিবাদে আজ, সোমবার হাওড়া পার্সেলের এজেন্টরা সমস্ত বুকিং বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছে। এজেন্ট আশরাফ আলি আরপিএফ, জিআরপি-সহ রেল আধিকারিকদের আগাম লিখিতভাবে জানিয়েছে, রেলের এই বেসরকারিকরণ নীতিতে কয়েক হাজার এজেন্ট-সহ নির্ভরশীল শ্রমিক আয়হীন হয়ে পড়বে। তাই এই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ।
আজ সমস্ত ট্রেনে বুকিং বন্ধ থাকার ফলে রেলের তিরিশ-চল্লিশ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়ে যাবে বলে মনে করেছেন পার্সেল কর্মীরা। পাশাপাশি এজেন্টরা প্রশ্ন তুলেছে, রেল ব্রেক ভ্যান বেসরকারি হাতে দিলে কেন এজেন্ট, শ্রমিক, ট্রলির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। যদিও এই অভিযোগ মানতে চায়নি রেল। হাওড়ার সিনিয়র ডিসিএম রাহুল রঞ্জন বলেছেন,”পেরিসিবল মার্চেন্ট ছাড়া আর কাউকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। পেরিসিবল জায়গায় অন্য কিছু বুকিং চলবে না।” পাশাপাশি তিনিও পরিস্থিতি বিচারের অপেক্ষা করছেন বলে জানান।
আন্দোলনকারী এজেন্ট ইরশাদ আলম, মনোরঞ্জন সিং, মোবারক হোসেন অভিযোগ করেছেন, প্রতিটা ট্রেনের সব ভ্যান লিজে গেলে সাধারণ মানুষকে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি। উদাহরণ তুলে তাঁরা বলেন, কোনও যাত্রী বেনারস যাবেন, তার হাউসহোল্ড বেনারস পর্যন্ত বুক হবে না। ট্রেনটির গন্তব্য পর্যন্ত বুকিং করতে হবে। এতে আর্থিক ক্ষতি অনেক। পার্সেল বুকিংয়ের ক্ষতি আরও বেশি। হাওড়া-গুয়াহাটি রেলের পার্সেল বুকিং প্রতি কেজি সাড়ে চার টাকা, সেখানে লিজ বুকিং কেজি প্রতি বারো টাকা থেকে চোদ্দ টাকা। এতবড় আর্থিক দায় চাপবে সাধারণ মানুষের উপর। জিনিসপত্রের দাম বাড়বে রেলের এই নীতিতে। পূর্ব রেলের প্রিন্সিপ্যাল চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার উদয়শঙ্কর ঝাঁ জানিয়েছেন, লাগেজ বুকিং যতদূর পর্যন্ত করতে চাইবেন ততদূর পর্যন্ত করা হবে। ট্রেনের অন্তিম যাত্রাস্থল পর্যন্ত করা হবে না। পার্সেল বুকিংয়ের ক্ষেত্রে প্রচুর বেশি ভাড়া পড়বে, এ সম্পর্কে তিনি বলেন, রেলের নিজস্ব বুকিংয়ের প্রচুর মাল চুরি যায়। রেলকে ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। লিজে থাকলে ভাড়া বেশি হলেও রেলের ঝামেলা নেই। নিরাপত্তার সঙ্গে লিজাররাই ঘরে পৌঁছে দেবে পার্সেল। এই জন্যই সব লাগেজ লিজে দেওয়া হচ্ছে।