অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের ছিল। কারও সঙ্গে অশান্তি ছিল না। এমনকী, কোনও মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের ব্যাপারেও কিছু শোনেনি পরিবার। তা হলে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত কেন নেবেন আইআইটি খড়্গপুরের মৃত ছাত্র মহম্মদ আসিফ কামার? এখনও উত্তর খুঁজে যাচ্ছে পরিবারের লোকজন।
রবিবার ভোর সাড়ে ৩টা নাগাদ আইআইটি খড়্গপুরের মদনমোহন মালব্য হলের SDS ব্লকের ১৩৪ নম্বর রুম থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মহম্মদ আসিফ কামারের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা করেছে আসিফ বলেই প্রাথমিক ধারণা পুলিশের। আত্মহত্যার আগে একটি মহিলার সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছিল আসিফের বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সেই মহিলাই কলেজ কর্তৃপক্ষকে দুর্ঘটনার আভাস জানিয়ে ফোন করে জানান।
সোমবার সকালে IIT খড়্গপুরে পৌঁছন আসিফের মেজো দাদা নাদিম-সহ দুই খুড়তুতো ভাই। সেখান থেকে খড়গপুর টাউন থানা হয়ে বিকেল নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পৌঁছন তাঁরা। তার পরেই শুরু হয়েছে ময়নাতদন্তের কাজ। এ দিন বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে নাদিম বলেন, ‘পুলিশ আমাদের যে সমস্ত ভিডিয়ো বা ঘটনার দিনের কিছু ফুটেজ দেখিয়েছে, তাতে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। কিন্তু, ও কেন এই কাজ করল সেটাই তো বুঝতে পারছি না। শনিবার রাতেও মায়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা হয়েছে। কোনও অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি।’
পুলিশ সূত্রে খবর, বিহারের শিওহর জেলার গারাহিয়া-র বাসিন্দা আসিফ। ইতিমধ্যেই তাঁর মোবাইল, ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। IIT খড়্গপুরের জনসংযোগ বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, ‘এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তদন্তে পুলিশের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আইআইটি খড়্গপুর কর্তৃপক্ষও পৃথকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।’ প্রসঙ্গত, গত ৫ মাসে ৩ জন মেধাবী পড়ুয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় উদ্বিগ্ন আইআইটি কর্তৃপক্ষ।
আসিফের সঙ্গে কি কোনও মেয়ের সম্পর্ক ছিল। দাদা নাসিম বলেন, ‘আমরা ওই ধরনের কোনও সম্পর্কের কথা জানি না। যে ফোন কলের কথা বলা হচ্ছে, তাঁকেও আমরা চিনি না। বাকিটা অবশ্যই পুলিশে তদন্ত থেকে জানতে পারব।’ পড়াশোনার দিক দিয়েও আসিফের উপর তেমন চাপ ছিল না বলেই দাবি দাদার। তাঁর কথায়, ‘আমাদের সব ভাইবোনেদের মধ্যে ওই সব থেকে মেধাবী ও শান্ত প্রকৃতির। ও কী ভাবে এই কাজ করতে পারে, সেটাই বুঝতে পারছি না। পড়াশোনার দিক দিয়েও তেমন চাপও ছিল না, কারণ ২-৩ জায়াগায় সামার ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়েছিল। দু’একদিনের মধ্যেই বেঙ্গালুরুতে ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার কথা ছিল। সে জন্য ব্যাগপত্র গোছানোর কাজও শুরু করেছিল।’