পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মুর্শিদাবাদে নিহত বাবা–ছেলে হরগোবিন্দ ও চন্দন দাসের পরিবারের সদস্যরা। সোমবার এ বিষয়ে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। যদিও এ দিন মামলার শুনানি হয়নি। আজ মঙ্গলবার ফের আইনজীবীকে বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে রবিবার থেকে সামশেরগঞ্জে নিহত বাবা–ছেলের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। হরগোবিন্দ ও চন্দন দাসের স্ত্রী’রা মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় চলে এসেছেন। এ দিকে হরগোবিন্দ দাসের ছোটো ছেলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের সদস্যদের অপহরণ করা হয়েছে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই রবিবার সল্টলেকের সেফ হোমে হানা দেয় পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে সেখাকার দরজা ভেঙে ঢোকার অভিযোগ তোলেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। পাশাপাশি তাঁদের জোর করে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করা হয়। এর বিরুদ্ধে সোমবারই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, অতি সক্রিয়তা দেখিয়েছে পুলিশ। কেউ তাঁদের অপহরণ করেনি।
রবিবার পুলিশি অভিযানের পরই স্বামীহারা দুই মহিলা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে লেখা হয়েছে, পুলিশ নিয়ম মেনে অভিযান চালায়নি। কোনও মহিলা কনস্টেবল সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হোক। তাঁরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সময় যাতে কোনও বাধার সম্মুখীন না হতে হয় সেই আর্জিও জানিয়েছিলেন। যদিও পুলিশের দাবি, হরগোবিন্দের আর এক ছেলের অপহরণের অভিযোগের প্রেক্ষিতেই অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, অভিযোগের কোনও নথি অভিযান চলাকালীন দেখায়নি পুলিশ। এ রকম কোনও অভিযোগ হয়ে থাকলে তা সম্পূর্ণ ভয় দেখিয়ে করানো হতে পারে বলে মনে করছে পরিবারের সদস্যরা।
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এবং আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় দুই নিহতের স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার জন্যেই অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার অমিত সাউ জানিয়েছেন, অপহরণের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করতে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোনও সারবত্তা নেই।