নারায়ণ সিংহ রায়: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানে যুদ্ধের আবহ তৈরি হচ্ছে। সামরিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দুদেশ। পাশাপাশি ভারত তৈরি হচ্ছে নতুন করে পাকিস্তান বিদ্বেষ। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে বসবাসকারী পাকিস্তানিদের চিহ্নিত করে বের করে দেওয়ার দাবি করছে বিজেপি। এরকম এক পরিস্থিতিতে বদলে গেল শিলিগুড়ির পাকিস্তান বস্তি-র নাম।
শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার বিশ্বাস কলোনি। মাটিগাড়া থানার কাছেই রয়েছে এই বিশ্বাস কলোনি। লোকমুখে এই কলোনির নাম পাকিস্তান বস্তি। কালের নিয়মে পাকিস্তান কলোনিই যেন বিশ্বাস কলোনির প্রধান নাম হয়ে উঠেছে। বিশ্বাস কলোনি শুধুমাত্র খাতায় কলমে।
এবার সেই বিশ্বাস কলোনির নাম পাল্টে দিতে উদ্যোগ নিল বঙ্গীয় হিন্দু সমাজ। সোমবার তারা বিশ্বাস কলোনির রেল গেট মোড়ে পৌঁছে 'ভারতমাতা মোড়' লেখা ব্যানার টাঙিয়ে দেয়। এরপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এলাকার মানুষজনের সঙ্গে বাকবিতন্ডা বেধে যায় বঙ্গীয় হিন্দু মহামঞ্চের কর্মীদের। ছুটে আসে মাটিগাড়া থানা থেকে বিশাল পুলিস বাহিনী। ঘটনাস্থলে চলে আসেন স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যরা। পঞ্চায়েত ও পুলিসের তত্পরতায় সেই বাকবিতন্ডা কমলেও এলাকার নাম বদল মেনে নিতে পারেছেন না এলাকার মানুষজন।
এলাকাবাসীর একাংশের বক্তব্য, নাম বদলে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু এই কাজ তাদের সঙ্গে নিয়ে করা যেত। অন্যদিকে, এলাকাবাসীর অন্য একাংশে দাবি, নাম বদলে তারা খুশি।
এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান হেমরাজ ছেত্রীর বক্তব্য, আমাদের না জানিয়েই এভাবে নামের ব্যানার লাগিয়ে দেওয়া উচিত হয়নি। এর মধ্যে অবশ্যই রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। তবে বঙ্গীয় হিন্দু মহামঞ্চের বক্তব্য, এই ঘটনার পেছনে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই।
উল্লেখ্য, পাকিস্তান বিরোধিতার আবহে অনেকে ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমেছে কেউ কেউ। কয়েকদিন আগেই বনগাঁর একটি রেল স্টেশনের টয়লেটে পাকিস্তানের পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। যারা ওই পতাকা লাগিয়েছিল তাদের গ্রেফতার করে পুলিস। জেরায় উঠে এসেছে, টয়লেটের দেওয়ালে তাদের পাকিস্তান জিন্দাবাদ লেখার পরিকল্পনা ছিল। অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপি জেলায় জেলায় পাকিস্তানি নাগরিক খুঁজে দেশ থেকে বের করার কাজে নেমে পড়েছে। এই দাবিতে তারা জেলায় জেলায় জেলা শাসকের দফতরে বিক্ষোভ দেখাবে।