নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: আউটডোরে চিকিৎসক না থাকায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে কড়া পদক্ষেপ করল জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। এই ঘটনায় নাগরাকাটার লুকসান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দুই চিকিৎসক এবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে শোকজ করেছেন জলপাইগুড়ি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদার। তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্বরত চিকিৎসকরা লুকসান স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারবেন না বলেও নির্দেশ জারি করেছেন সিএমওএইচ।
গত শনিবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ লুকসান প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্দীপকুমার গুপ্ত(৩৮) নামে এক যুবককে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আনা হয়। অভিযোগ, ওই সময় সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’জন চিকিৎসকের ডিউটি থাকলেও তাঁরা কেউই সেসময় ছিলেন না। বাধ্য হয়ে রোগীকে সুলকাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলেও আর বাঁচানো যায়নি। এরপর সেদিন নাগরাকাটার বিএমওএইচ-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জাহির করে তুমুল বিক্ষোভ চলে। সোমবার লুকসানের পঞ্চায়েত সদস্য মহাবীর প্রসাদের নেতৃত্বে বাসিন্দারা জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে স্মারকলিপি দেন।
সিএমওএইচ-এর অফিসে দাঁড়িয়ে মৃতের ভাই জয়দীপ গুপ্ত বলেন, আমার দাদা কার্ডিয়াক রোগী ছিল। আমাদের বাড়ি থেকে লুকসান স্বাস্থ্যকেন্দ্র বেশি দূর নয় বলে ওকে দ্রুত সেখানে নিয়ে যাই। তখন আউটডোরের টাইম হওয়া সত্ত্বেও মেডিক্যাল অফিসার ছিলেন না। ডাক্তার থাকলে হয়তো দাদাকে বাঁচানো যেত। সিএমওএইচ বলেছেন লুকসান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খাতায়কলমে দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। কিন্তু রোগীরা সেখানে চিকিৎসকের দেখা পান না।
যদিও সিএমওএইচ বলেন, লুকসান স্বাস্থকেন্দ্রে চিকিৎসক না থাকার অভিযোগ মারাত্মক। দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তাররা সেদিন আউটডোরে ছিলেন না বলে অভিযোগ। তাঁদের শোকজ করা হয়েছে। নাগরাকাটা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে শোকজ করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অনুমতি ছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা লুকসান স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারবেন না বলে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সন্দীপের জন্য সেদিন একটা স্ট্রেচারও পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে কাপড়ে বেঁধে নিয়ে যেতে হয়েছিল। যদিও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসেবে সব পরিকাঠামো লুকসানে রয়েছে। - নিজস্ব চিত্র।