হু হু করে পড়ুয়া কমছে গাজোলের ২২টি স্কুলে, প্রধান শিক্ষকদের ‘ক্লাস’ নিলেন এসআই
বর্তমান | ০৬ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: দিনদিন কমছে মালদহের গাজোল সার্কেলের ২২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ার সংখ্যা। বেশকিছু স্কুলে মাত্র তিন, দশ, পাঁচজন পড়ুয়া! এমন চলতে থাকলে স্কুলগুলি পড়ুয়া শূন্য হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। সেই উদ্বেগ থেকে সোমবার সংশ্লিষ্ট সার্কেলের উদ্যোগে ২২ টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও টিআইসিদের স্কিল ট্রেনিং দেওয়া হল। এদিনের বৈঠকে এসআই স্কুলের প্রধানদের কাছে জানতে চান পড়ুয়া কমে যাওয়ার কারণ কী? কীভাবে পড়ানো হচ্ছে স্কুলে? ফের স্কুলের পথে ফেরাতে পড়ুয়াদের আরও যত্ন করে পড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কীভাবে পড়াশোনাকে ছোটদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।
গাজোল সার্কেল ৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তার মধ্যে ধরইল, রঘুনাথপুর, রানিপুর, রুহিদাস, থালিপুকুর, কালীনগর, নওদা, বিনোদপুর, দুর্গাপুর, ময়নাজুনিয়র, দেবীদহ, বাবলাবোনা, শ্যামপুর, দুর্গাপুর, মালঞ্চ, জামালপুর, রহিমপুর, বোমকা সহ ২২টি স্কুলে পড়ুয়া ৫০ জনের নীচে। গত পাঁচ বছর ধরে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে সেখানে। এর মধ্যে অনেক স্কুলে চলতি বর্ষে কোথাও তিনজন, কোথাও বা নয় এবং দশজন করে পড়ুয়া রয়েছে।
প্রধান শিক্ষকদের স্কিল ট্রেনিংয়ে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এসআই। সার্কেলের ট্রেনিংয়ে জানানো হয়, নিয়ম অনুসারে পড়ুয়াদের বিভিন্ন ছবি দেখিয়ে পড়ানোর ব্যবস্থা করতেই হবে। অনেক পড়ুয়ার পড়ার পাশাপাশি খেলা সহ অন্যান্য দিকে প্রতিভা থাকতে পারে। সেই দিক খুঁজে উৎসাহ দিতে হবে তাদের। পাঠ্যবই পড়ার পাশাপাশি আবৃত্তি, গান গাওয়ার দিকেও জোর দিতে হবে।
গাজোল সার্কেলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রশান্ত রায় বলেন, অনেক স্কুলে ১০ জনের কম পড়ুয়া রয়েছে। এমন চলতে থাকলে শূন্য হয়ে যাবে পড়ুয়ার সংখ্যা। সেজন্য এদিন ২২টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে স্কিল ট্রেনিং নেওয়া হয়। ঠিকভাবে স্কুলগুলিতে পড়ানো হচ্ছে কি না, জানার চেষ্টা করা হয়েছে প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে।
সার্কেল সূত্রে খবর, পড়ুয়া সংখ্যা বাড়াতে বেশকিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সার্কেলে পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। ধাপে ধাপে গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক স্কুলগুলিকে নিয়ে ওয়ার্কশপ করা হবে। কীভাবে পড়ুয়াদের পড়াতে হয়, সেসব দেখানো হবে। এদিন কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন শ্যামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক পিঙ্কু রায়। তিনি বলেন, ছাত্র কম সহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কীভাবে ছাত্র বাড়ানো যায়, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। ছাত্র এবং অভিভাবকদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন এসআই। পড়ুয়াদের উন্নতির লক্ষ্যে এই কর্মশালা খুবই ভালো উদ্যোগ। - নিজস্ব চিত্র।