যুবকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল চিতাবাঘ, লাঠি উঁচিয়ে তাড়ালেন দুই বন্ধু
বর্তমান | ০৬ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: রবিবার রাত তখন ৯টা। নাগরাকাটা ব্লকের জঙ্গলঘেঁষা খেরকাটার হিসেবে বেশ গভীর রাত। দুই বন্ধু নুর আলম হোসেন ও শহিদুল হকের সঙ্গে চৌপথি থেকে নিজের বাড়ি মসজিদ লাইনে ফিরছিলেন আশরাফুল গণি। হাঁটতে হাঁটতে খানিকটা পিছিয়ে পড়েছিলেন। হঠাৎ করেই যমদূতের মতো পাশের জঙ্গল থেকে ঘাড়ের উপর আছড়ে পড়ল চিতাবাঘ।
হিংস্র শ্বাপদের আক্রমণে তৎক্ষণাতই মাটিতে পড়ে যান আশরাফুল। তাঁর হাতে, পেটে ও পিঠে থাবা বসিয়ে দেয় চিতাবাঘটি। কিন্তু ভয়ঙ্কর প্রাণীর সামনে পড়েও বন্ধুকে ফেলে পালাননি নুর আলম ও শহিদুল। হাতে থাকা লাঠি নিয়েই চিৎকার করে তেড়ে যান দুজনে। আর তাতেই আশরাফুলকে ছেড়ে জঙ্গলে পালায় চিতাবাঘটি।
প্রাণে বাঁচলেও বেশ জখম হয়েছেন আশরাফুল। তাঁকে উদ্ধার করে সুলকাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে দ্রুত ডায়না রেঞ্জের বনকর্মীরা হাসপাতালে চলে আসেন। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন আশরাফুল।
বন্ধুর প্রাণরক্ষাকারী নুর আলম বলেন, এলাকায় প্রতিদিন চিতাবাঘ বের হচ্ছে। রাতে সচরাচর আমরা বাড়ি থেকে বের হই না চিতাবাঘের ভয়ে। বের হতে হলে একসঙ্গে কয়েকজন মিলে যাই। সঙ্গে লাঠি থাকে। তিনজন একসঙ্গে থাকার পরও চিতাবাঘ হামলা করে। বরাতজোরে আশরাফুলকে প্রাণে বাঁচানো গিয়েছে।
খুনিয়ার রেঞ্জার সজলকুমার দে বলেন, ওই বস্তিতে একটি খাঁচা পেতে রাখা হয়েছে। কিন্তু এখনও চিতাবাঘ ধরা পড়েনি। আমরা মাঝেমধ্যেই সেখানে টহল দিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ডায়না নদীর ধারে ও খেরকাটা জঙ্গলের পাশে অবস্থিত এই প্রত্যন্ত এলাকাটিতে সারা বছর হাতি ও চিতাবাঘের উপদ্রব লেগেই রয়েছে। বেশ কয়েক মাস আগে এই এলাকায় একটি বাড়ির উঠোন থেকে এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে মেরে ফেলেছিল চিতাবাঘ। রবিবার রাতে ফের চিতাবাঘের হামলার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামজুড়ে।