নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বেলডাঙা থেকে বহরমপুর সদরের সার্কেল ইনস্পেক্টরের অফিস সরানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের পাশেই অফিস থাকায় উষ্মা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিআইয়ের অফিস ওই আশ্রমের পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।’ মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশ পেয়েই মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিসের আধিকারিকরা তৎপর হন।
এদিন নাম না করে বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তিদের নিশানা করলেন মমতা। তিনি বলেন, এখানে কোনও একটা সেবাশ্রম আছে। সেখানকার কী কীর্তি, তার কী কুকীর্তি সবই জানি। তিনি কীভাবে মানুষকে উস্কান, বেলডাঙা থেকে শুরু করে সুতি, ধুলিয়ান পর্যন্ত, আমি ওর প্রত্যেকটা কাজ জানি। আমাকে এত দুর্বল ভাবার কিছু নেই। এমনকী মাঝেমধ্যে তিনি রাতে আলো নিভিয়ে দেন। ওয়াকফ আন্দোলনের সময় ৪৮ ঘণ্টা আলো নিভিয়ে রেখেছিলেন। তিনি এটা করতে পারেন না। কী লুকোতে চেয়েছিলেন। যদি কোনও কুৎসিত ঘটনা ঘটে, তা সিসি ক্যামেরায় ওঠে। আপনারা কী লুকোতে চেয়েছিলেন, যে আলো নেভাতে হল। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, উনি সেন্ট্রাল প্রোটেকশনে আছেন, থাকুন, ভালো থাকুন। আমি কারও ক্ষতি চাই না। ওখান থেকে সিআইয়ের অফিস সরিয়ে নেওয়া হবে।
মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনা স্মরণ করিয়ে মমতা বলেন, ‘কয়েকজন ধর্মীয় নেতা সেজেছে। পালে বাঘ না পড়লেও বাঘ, বাঘ বলে চিৎকার করে রাজনৈতিক সুবিধা নেয়। এরা গৃহশত্রু। আমি সকলকে মিত্র ভাবি। আমার কোনও শত্রু নেই। কিন্তু দাঙ্গা যারা করে, তাদের আমরা মিত্র ভাবি না। মনে রাখতে হবে, মুর্শিদাবাদের ইতিহাস আছে। এটা বাংলার রাজধানী ছিল। গন্ডগোল কারা করিয়েছেন, সবাই জানে। এরা নাকি ধর্মের নেতা!’
এদিন এই ধার্মিক নেতাদের অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি খেদ প্রকাশ করে বলেন, মানুষে মানুষে বিভাজন হচ্ছে। দু’-তিনটে লোক আছে, তাঁরা এই গন্ডগোল পাকাচ্ছে। তারা নাকি বিরাট বিরাট ধর্মনেতা। মানে ধর্মের নামে বিধর্মী নেতা। অনেক বড় বড় কথা বলে। আর আর্থিক উৎস? আমার মনে হয় বিজেপির নেতাদের জিজ্ঞেস করবেন, তারাই বলে দেবে। আমি পরিষ্কার বলছি, এর টোটাল সত্য তথ্য উদ্ঘাটন করতে আর কিছুটা আমার বাকি আছে। পেয়ে গেলে প্রেসের সামনে আসবে। কারা করেছে, কীভাবে প্ল্যান করে করেছে। - ছবি: ইন্দ্রাশিস বাগচী।