নিজস্ব প্রতিনিধি, কালীগঞ্জ: কালীগঞ্জ বিধানসভায় কমল মোট ভোটারের সংখ্যা। ‘বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনী’র পর দু’হাজারের বেশি ভোটার কমেছে বলে জানা গিয়েছে। সেইসঙ্গে ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে প্রায় ছ’হাজার নাম। যার ফলে কালীগঞ্জ বিধানসভায় বর্তমানে ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৬৭০ জন। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে নদীয়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হাতে সংশোধিত ভোটার তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সম্ভাব্য উপনির্বাচনের আগে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি করার জন্য ব্যাপক কাটছাঁট করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে কড়া নজরদারি চালানো হয়েছিল ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন ও বিয়োজনের উপর। তার ফলে কালীগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনের নিয়ে জল্পনা আরও বাড়ল।
জেলাশাসক বলেন, কালীগঞ্জ বিধানসভার জন্য বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শেষ হয়েছে। সেইমতো তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। পাশাপাশি তালিকা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে তা জমা করার নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী কালীগঞ্জ বিধানসভায় ভোটার ছিল ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ৮৯৪ জন। সম্ভাব্য উপনির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনীর কাজ শুরু করা হয়। ৮ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত সেই কাজ চলে। ভোটার তালিকা সংশোধনীর কাজ দেখতে রাজ্যে শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিকরাও আসেন। ৫ এপ্রিল শুধুমাত্র সেই বিধানসভার নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে কালীগঞ্জ বিধানসভায় ভোটার সংখ্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৬৭০ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার হচ্ছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৩৬৩ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ২২ হাজার ৩০৩ জন। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ২ হাজার ২০৮ জন ভোটার কমেছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কালীগঞ্জ বিধানসভার ভোটার তালিকা সংশোধনী কর্মসূচিতে মোট ১১ হাজার ৮৮৪টি আবেদন জমা পড়েছিল। যার মধ্যে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জামা পড়েছিল ৬ হাজার ২৭৪টি। ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছে ৫ হাজার ৮৪০ জনের। যার মধ্যে মৃত্যুজনিত কারণে বাদ পড়েছে ৩ হাজার ৪২৬ জনের নাম। স্থান পরিবর্তন করার জন্য নাম বাদ পড়েছে ২ হাজার ৩৯৪ জন ভোটারের। ভোটার তালিকা নাম সংযোজন হয়েছে ৩ হাজার ৬৩২ জনের।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের কালীগঞ্জ বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদ মারা যাওয়ার পর থেকেই উপনির্বাচন নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবেও একাধিক নাম হাওয়ায় ভাসছে। এই উপনির্বাচনের আবহেই, গত পয়লা এপ্রিল থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ইভিএম ও ভিভিপ্যাট চেকিংয়ের কাজ হয়। সেইসঙ্গে কালীগঞ্জ বিধানসভায় ৪৮টি নতুন বুথ তৈরি হয়েছে। তাই বুথের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৯টি। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ২৬১টি।