নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেই রবিবার গভীর রাতে বহরমপুর শহরে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। মধুপুরের একটি ক্লাব চত্বরে চার-পাঁচ রাউন্ড গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। তবে গুলি কারও গায়ে লাগেনি। দুষ্কৃতীরা স্থানীয় দুই যুবককে বেধড়ক মারধর করে। তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিস তদন্তে নেমে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিস। উদ্ধার করা হয়েছে একটি স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র। ধৃতরা শাসকদলের অনুগামী বলেই জানা গিয়েছে। ঘটনায় যাঁরা জখম হয়েছেন, তাঁরাও নিজেদের তৃণমূল নেতা-কর্মী বলে দাবি করেছেন।
জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে বহরমপুরের মধুপুর এলাকার বাবুলবোনা ক্লাবের সদস্যরা আড্ডা দিচ্ছিলেন। হঠাৎই এলাকার কয়েকজন যুবক ক্লাবের সামনে এসে চিৎকার, চেঁচামেচি ও গালিগালাজ করতে থাকে। ক্লাব সদস্যরা প্রতিবাদ করতেই তারা হুমকি দিয়ে ফিরে যায়। অভিযোগ, ঘটনার কিছুক্ষণ পর বহিরাগত কয়েকজনকে নিয়ে ক্লাব চত্বরে ফিরে আসে কিছু দুষ্কৃতী। তারা আগ্নেয়াস্ত্র বের করে চার-পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি ক্লাব সদস্যদের বন্দুকের বাঁট ও সামনে রাখা স্ট্যান্ডফ্যান তুলে মারধর করে। ভাঙচুর করা হয় কয়েকটি চেয়ার টেবিল। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায়। গুরুতর জখম অবস্থায় দুই ক্লাব সদস্যকে স্থানীয়রা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান।
জখম ক্লাব সদস্য মিঠু জৈন বলেন, ওইদিন সন্ধ্যায় আমরা ক্লাবের সামনে বসে গল্প করছিলাম। তখনই পাড়ার কিছু ছেলে ক্লাবের সামনে গালিগালাজ করছিল। আমরা বারণ করায় তারা ফিরে যায়। পরে কিছু দুষ্কৃতীকে নিয়ে এসে ওরা আমাদের উপর চড়াও হয়। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই চালানো হয় গুলি। স্ট্যান্ডফ্যান এবং বন্দুকের বাঁট দিয়ে মেরে আমাদের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। কী কারণে এই হামলা, তা আমরা বুঝতে পারছি না। আমিও তৃণমূল করি। যারা মেরেছে তারা তৃণমূলের যুবনেতা পাপাই ঘোষের সহযোগী। দুষ্কৃতীরা অস্ত্র কোথা থেকে পেল? আমরা পুলিস প্রশাসনকে সমস্ত বিষয়টি জানিয়েছি।
বহরমপুর টাউন যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পাপাই ঘোষ বলেন, এক সময় মিঠু তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিজেপি করেন। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা যখন বাড়ি বাড়ি প্রচার করছিল, সেই সময় ওর কিছু লেঠেল বাহিনী নিয়ে আমাদের কর্মীদের উপর চড়াও হয়। তখন এলাকার সাধারণ মানুষ ও তৃণমূল কর্মীরা ওই ক্লাবে গিয়ে প্রতিবাদ করে। ওখানে অনেক অসামাজিক কাজকর্ম হয়। পুলিস ঘটনার তদন্ত করছে।
বহরমপুরের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক লাল্টু দাস বলেন, নিজেদের বখরা নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে। এখন বেকায়দায় পড়ে বিজেপিকে জড়ানোর চেষ্টা চলছে। এসব কেউ বিশ্বাস করবে না। বিজেপি কখনও এই অস্ত্রের নোংরা রাজনীতি করে না।