সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: রবিবার রাতে সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদে হরগোবিন্দ দাস ও ছেলে চন্দন দাসের ঘরের তালা ভেঙে দুষ্কৃতীরা প্রবেশ করে। পরে পুরনো দরজা বদলে নতুন দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছে দাস পরিবার। সোমবার সকালে এই ঘটনায় বিক্ষোভ দেখায় এলাকাবাসী। পুলিস ঘটনাস্থলে গেলে পুলিসকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়রা। তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যার্থ হয় পুলিস। এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে ফিরে যেতে বাধ্য হয় পুলিস। এলাকায় পুলিসি টহল সত্ত্বেও কী করে দুষ্কৃতীরা হরগোবিন্দের বাড়িতে ঢুকল তা নিয়ে ক্ষোভ জানান তারা। রাতে হরগোবিন্দের ঘরে কেউ ছিলেন না। বাইরে থেকে তালা দেওয়াছিল। ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। পুলিসের মদতেই দুষ্কৃতীরা এই কাজ করেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তবে হরগোবিন্দের ছেলে এসব বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিস জানিয়েছে, তালা ভাঙা বা দরজা বদল করা এসব কিছু হয়নি। পরিবারের লোকজনকে কেই বা কারা ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আসলে কী ঘটেছে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।
জানা গিয়েছে, হরগোবিন্দ দাসের একতলা পাকা বাড়ি। দিন ২৫ আগে ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে অশান্ত হয়ে ওঠে সামশেরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা। হরগোবিন্দ দাসের বাড়ি সহ একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দন দাসকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৃশংস ভাবে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার পর আতঙ্কিত পরিবারের সদস্যারা বাড়িতেই ছিলেন। তবে, শনিবার হঠাৎই পরিবারের তাঁরা বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান। মৃত হরগোবিন্দের এক ছেলে এলাকায় থাকলেও ঘটনার রাতে তিনি ঘরে ছিলেন না বলে জানিয়েছেন। ফলে মূল দরজায় তালা দেওয়াছিল। রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা সেই তালা ভেঙে ঘরে ঢোকে। তারপর মূল গেটের ভাঙা দরজাটি বদলে দেয়। কারা এসব করেছে তা কেউ জানে না। প্রতিবেশীদের ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে দেয় দুষ্কৃতীরা। ফলে কারা এসেছিল তা দেখেননি এলাকাবাসী। তেমনটা দাবি করেছেন তারা।
মৃত হরগোবিন্দ দাসের ছেলে বিপ্লব দাস বলেন, মা, দিদি ও বউদি কেউ বাড়িতে নেই। কারা তাদের নিয়ে গিয়েছে। তাদের ঘরে ফিরিয়ে আনতে পুলিসকে লিখিত আবেদন করেছি। রাতে ঘরে ছিলাম না, জেঠতুতো দাদার বাড়িতে ছিলাম। আমাদের না জানিয়ে কে দরজা বদলে দিয়েছে। ভেতরের ঘরের শিকল খুলে বাইরের দরজায় লাগিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মাধবী দাস বলেন, রাতে এলাকায় পুলিস থাকা সত্ত্বেও এসব ঘটছে কীভাবে পুলিসকে তার জবাব দিতে হবে।