সীমিত পরিকাঠামোয় পঠনপাঠন, দুই ছাত্রের র্যাঙ্কে মর্যাদার শীর্ষে ২ স্কুল
বর্তমান | ০৬ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: সীমিত পরিকাঠামো। তারমধ্যেও আরামবাগ মহকুমার গ্রামীণ এলাকা থেকে মাধ্যমিকে র্যাঙ্ক করায় নামী স্কুলের তালিকায় ঢুকে পড়ল দু’টি স্কুল। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় আরামবাগের গৌরহাটি হরদাস ইন্সটিটিউশন থেকে সিঞ্চন নন্দী ৬৯১ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মেধা তালিকায় পঞ্চম হয়েছে। পুরশুড়ার চিলাডাঙ্গি রবীন্দ্র বিদ্যাবীথি থেকে অয়ন্তিকা সামন্ত ৬৮৬ নম্বর পেয়ে দশম স্থান অধিকার করেছে। দুই কৃতীর সাফল্যে এলাকায় এখন খুশির হাওয়া।
গৌরহাটি হরদাস ইন্সটিটিউশনে ২০২০ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় দিব্যকান্তি ঘোড়ুই রাজ্যের মেধা তালিকায় সপ্তম হয়েছিল। এবার সেখান থেকেই সিঞ্চন পঞ্চম হওয়ায় নামী স্কুলের তালিকায় এখন ওই স্কুল। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌরহাটি হরদাস ইন্সটিটিউশনে এবার ৭৮ জন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিকে বসেছিল। তারমধ্যে ৭৪ জন পাশ করেছে। সিঞ্চন ছাড়াও সৌনভ বসু ৬৬৯ নম্বর পেয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত কোঙার বলেন, স্থায়ী ও পার্শ্বশিক্ষক মিলিয়ে স্কুলে আপাতত ৩০ জন শিক্ষক রয়েছেন। এখনও সাতজন শিক্ষকের প্রয়োজন। গণিতে মাত্র একজন শিক্ষক রয়েছেন। আবেদন করা হয়েছে। তারসঙ্গে ভবন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। সিঞ্চনকে আমরা পড়াশোনায় সাহায্য করেছি ঠিকই, তবে ও নিজের চেষ্টাতেই মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। আগামী দিনে ও আরও এগিয়ে যাক।
পুরশুড়ার চিলাডাঙ্গি রবীন্দ্র বিদ্যাবীথি থেকে এই প্রথম রাজ্যের মেধা তালিকায় স্থান পেয়ে ইইতমধ্যেই এলাকায় সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছে অয়ন্তিকা। এর আগে ২ থেকে ৩ নম্বরের ব্যবধানের জন্য মেধা তালিকায় আসতে পারেনি এই স্কুলের পড়ুয়ারা। অয়ন্তিকা সেই অধরা স্বপ্ন সফল করেছে। এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে তৎপর স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিলাডাঙ্গি রবীন্দ্র বিদ্যাবীথি থেকে এবার ১৪১জন পরীক্ষার্থী মাধ্যমিকে বসে। তারমধ্যে ১২৮জন পাশ করেছে। সেখানে অয়ন্তিকা ছাড়া অর্কিত বাগ ও অন্বেষা সাঁতরা ৬৬৪ করে নম্বর পেয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকার এই স্কুল থেকে ৭৫ শতাংশর বেশি নম্বর পেয়েছে ২০ জন। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অয়ন্তিকার উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার জন্য ভর্তি ফি মকুব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারসঙ্গে বইপত্রও দেওয়া হবে। ওই স্কুলেও স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন ১৮ জন। সেখানে আরও সাতজন শিক্ষকের শূন্যপদ রয়েছে। বিশেষ করে উচ্চ মাধ্যমিকস্তরে বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক অপ্রতুলতা আছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সন্দীপ প্রামাণিক বলেন, অয়ন্তিকা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। ও খুব পরিশ্রম করেছে। তবে আমরাও স্কুলে প্রত্যেকটি ক্লাস পর্যবেক্ষণ করেছি। টেস্টের পর পড়ুয়াদের উৎসাহিত করা হতো। আগামী দিনেও যাতে এমন সাফল্য আসে, তার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আরও শিক্ষকের প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, দু’টি স্কুলেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোট আটজন শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। তারপর সাতজন শিক্ষক কোর্টের নির্দেশমতোই ফের স্কুলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু, ডিসেম্বর মাসের পর কী হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দুই স্কুলই। - নিজস্ব চিত্র