মেছুয়া বাজারের ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু ঘিরে শহর জুড়ে যখন চাঞ্চল্য, তখন পার্কস্ট্রিটের একাধিক রুফটপ রেস্তরাঁ নিয়ে নড়েচড়ে বসে কলকাতা পুরসভা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আকস্মিক পরিদর্শনের পরই ম্যাগমা হাউজের ছাদ ভাঙার কাজ শুরু হয়। তবে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হওয়ার পর আপাতত সেই ভাঙার কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘ওপরে ভগবান, তারপরেই আদালত। আমি তো শুধুমাত্র একজন মেয়র। আদালত যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত। আমাদের কিছু বলার নেই।’
তিনি আরও বলেন, রুফটপ রেস্তরাঁগুলোর বেআইনি গঠন নিয়ে পুরসভা চিন্তিত। আগুন লাগলে সেখানে উদ্ধার কাজ চালানো খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, কারণ চারদিক ঢাকা থাকে, হাইড্রলিক ল্যাডার ব্যবহারও সম্ভব হয় না। ‘জতুগৃহে যেন আর কোনও জায়গা না বদলে যায়, তার জন্য প্রতিটি রেস্তরাঁ আর গেস্ট হাউসের অডিট হওয়া জরুরি। ফায়ার সার্ভিসকে অনুরোধ করব, প্রতিটি জায়গায় অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখুক।’ এদিন এমনটাই বলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
শহরে হুক্কা বার বন্ধ হোক এমটাই চেয়েছিলেন মেয়র। কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্তে তা সম্ভব হয়নি। সেই প্রসঙ্গ টেনে মেয়র বলেন, ‘একজন বাবা হিসেবে আমি হুক্কা বার বন্ধ করতে চেয়েছিলাম, কারণ এর প্রভাব নতুন প্রজন্মের উপর পড়ছে। কিন্তু আদালতের নির্দেশে তা চালু রয়েছে। এখানে আমার কিছু করার নেই।’
স্টিফেন কোর্টের আগুনের ঘটনার উদাহরণ দিয়ে ফিরহাদ জানান, ‘সেই সময় ছাদে ওঠার গেট যদি খোলা থাকতো, তাহলে এত প্রাণহানি হত না। হোটেলের কর্তব্য প্রথমে অতিথিদের বাঁচানো, কিন্তু এখানে দেখা গেল, মালিকরা পালিয়ে গেল, আর অতিথিরা কালো ধোঁয়ার ফাঁদে পড়ে গেলেন। এটা মর্মান্তিক।’
রুফটপ খুলে রাখলেও অন্য আরও সমস্যা রয়েছে বলে মনে করেন মেয়র। কেউ কেউ আত্মহত্যার চেষ্টা করতে পারেন, তাই নিরাপত্তার কারণে উঁচু জাল দিয়ে ঘেরা দরকার বলেও মত দেন তিনি। শেষে মেয়র বলেন, ‘পুরসভা শুধু নিরাপত্তার কথা ভেবেই পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু কেউ কেউ ব্যবসায়িক স্বার্থে আদালতের দ্বারস্থ হন। এখন আদালতই ঠিক করুক কী করা হবে।’