• মুর্শিদাবাদে ‘বীরভূম মডেল’! ১০ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ মমতার, সঙ্গে কয়েক দফা পরামর্শ
    আনন্দবাজার | ০৬ মে ২০২৫
  • মুর্শিদাবাদে দলের একাধিক জনপ্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে ‘পরিকল্পিত হিংসা’র ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সাম্প্রতিক যে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, তার পুনরাবৃত্তি যাতে আর না হয়, তা নিশ্চিত করতে জেলার বিধায়ক, সাংসদ এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে বিশেষ বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। শাসকদলের একটি সূত্রে খবর, বীরভূমের কোর কমিটির মতো মুর্শিদাবাদেও ১০ জন সদস্যের কমিটি গঠন করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যে কয়েক জনকে দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।

    সোমবার দুপুরে কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে বহরমপুরে পৌঁছোন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর বহরমপুর সার্কিট হাউস থেকে জেলাশাসককে সঙ্গে নিয়ে তিনি পৌঁছোন জেলা প্রশাসনিক ভবনে। সেখানকার কনফারেন্স রুমে মুর্শিদাবাদের একাধিক তৃণমূল বিধায়ক, পুরসভার চেয়ারম্যান, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি এবং জেলা ও রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন মমতা। সেখানে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সংসদ ও বিধায়কদের কাছ থেকে তাদের অভিমত জানতে চান বলে খবর। তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রায় ৩৫ মিনিটের ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বার বার জেলার শান্তি, সম্প্রীতি এবং ঐতিহ্য বজায় রাখার বিষয়ে জোর দেন।

    মুর্শিদাবাদের মতো তৃণমূলের ‘শক্ত ঘাঁটি’তে কী ভাবে ‘পরিকল্পিত ভাবে উস্কানি’ দিয়ে অশান্তি বাঁধানো সম্ভব হল, তা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বৈঠকে ছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। আলোচনা নিয়ে বিশেষ কিছু না-বললেও তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন দলের সকল জনপ্রতিনিধি যেন জনসংযোগের উপর জোর দেন। নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী প্রস্তুতিও শুরু করে দেওয়ার কথা বলেছেন। ভরতপুরের বিধায়কের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিজেপি মুর্শিদাবাদ জেলায় যে নোংরামো করেছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। কিছু লোক এখানে অশান্তি পাকিয়েছে।’’’

    তৃণমূলের অন্য একটি সূত্রে খবর, জেলার উন্নয়ন এবং সার্বিক পরিস্থিতি ‘মনিটর’ করার জন্য ১০ জনের একটি কমিটি তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, ওই কমিটিতে ছ’জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা এবং চার জন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাকে রাখতে হবে। অন্য দিকে, বৈঠকে উপস্থিত থাকা নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিধায়ক বলেন, ‘‘বৈঠকে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে বারণ করেছেন। তবে আজকের বৈঠকে হুমায়ুন কবীরকে ‘স্ট্রং ম্যান’ বলেও প্রশংসা করেছেন তিনি।’’ শোনা যাচ্ছে, মমতার প্রস্তাবিত কমিটিতে হুমায়ুন ছাড়াও হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখও থাকতে পারেন।

    বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের এক নেতা জানান, সুতি এবং শমসেরগঞ্জের ঘটনার পর যে ভাবে অপপ্রচার চলছে, তাতে মুখ্যমন্ত্রী যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। ভবিষ্যতে যাতে কোনও দাঙ্গাকারী এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করতে পারে সেই বিষয়ে প্রশাসনকে সজাগ থাকতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি দলের নেতাদেরও সজাগ থাকতে বলেছেন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)