বিয়ের কথা এ বার ‘বিশ্বাস’ করলেন দিলীপের ভাই, বৌদিকে স্বচক্ষে দেখে তবেই
আনন্দবাজার | ০৬ মে ২০২৫
অবশেষে ‘বিশ্বাস’ হল হীরক ঘোষের। স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারকে নিয়ে সোমবার গোপীবল্লভপুরের ২ নম্বর ব্লকের কুলিয়ানা গ্রামে পৈতৃক ভিটেতে গেলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। বিয়ের পরে প্রথম বার। তার পরেই ‘বিশ্বাস’ হল হীরকের।
বৈশাখের শুরুতে নিজের নিউ টাউনের বাড়িতে রিঙ্কুকে বিয়ে করেছেন দিলীপ। উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতার মা পুষ্পলতা ঘোষ-সহ ঘনিষ্ঠ কয়েক জন। প্রবীণ নেতার বিয়ে নিয়ে হইচই হয়েছে বিস্তর। অনেকেই আবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের এই সদস্যের বিয়ে নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। সেই দলে ছিলেন তাঁর ভাই হীরক। তিনি বলেছিলেন, ‘‘এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না দাদা বিয়ে করছেন। যত ক্ষণ না দেখব, তত ক্ষণ পর্যন্ত বিশ্বাস করতেই পারব না।’’ বিয়ের পরে সোমবার স্ত্রী রিঙ্কুকে নিয়ে নিজের পৈতৃক ভিটেয় গেলেন দিলীপ। মা পুষ্পলতা নতুন বউকে বরণ করে তোলেন বাড়িতে। নববধূর জন্য বাড়িতে রান্না হয় সর্ষে ইলিশ। রাঁধেন রিঙ্কুর তিন জা। সঙ্গে ছিল আরও অনেক পদ। দিলীপের ভাই হীরক বলেন,‘‘দাদা-বৌদিকে একসঙ্গে দেখে আমরা খুবই খুশি। এ বার মনে হল দাদা সত্যি বিয়ে করেছে। আমাদের নতুন বৌদি খুব ভাল। খুব মিশুকে। মুহূর্তের মধ্যেই সকলকে আপন করে নিয়েছেন।’’
রবিবার রাতে ফোন করে বড় দাদা মুরারীমোহন ঘোষ, সেজ ভাই দীপক ঘোষ, ছোট ভাই হীরক ঘোষ এবং ওড়িশার বারিপদায় মামাবাড়ির আত্মীয়দের কুলিয়ানার বাড়িতে সোমবার আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান দিলীপ। তার পরেই কুলিয়ান গ্রামের ভিটেতে তোড়জোড় শুরু হয়। বড় জা প্রীতি ঘোষ, সেজ জা সুপর্ণা ঘোষ এবং ছোট জা গঙ্গা ঘোষ রান্নার কাজে লেগে পড়েন। সাদা ভাত, ডাল, নিম বেগুন, কলমি শাক ভাজা, পটল ভাজা, বড়ি ভাজা, বেগুন ভাজা, এঁচোড়ের ডালনা, আমের চাটনি রান্না করেন তাঁরা। এর মধ্যে কলকাতা থেকে তিনটি ইলিশ নিয়ে বাড়িতে হাজির হন সস্ত্রীক দিলীপ। রান্না করা হয় সর্ষে ইলিশ। চার ভাই এবং তাঁদের স্ত্রী দুপুরে এক সঙ্গে খেতে বসেন। দিলীপ ঘোষের মা পুষ্পলতা বলেন, ‘‘আজ আমার সবচেয়ে বড় খুশির দিন। চার ছেলে-বৌমা একসঙ্গেই বাড়িতে রয়েছে।’’
দিলীপ গ্রামে ঢুকে প্রথমে যান তাঁর কাকুর বাড়ি। সেখান থেকে গ্রামের জগন্নাথ মন্দির এবং তাঁদের কুলদেবতা শিবের মন্দির দর্শন করে বাড়িতে যান। রিঙ্কু বলেন, ‘‘আমি শুনেছিলাম সুবর্ণরেখা নদীর তীরে ওঁর বাড়ি। আসার খুব ইচ্ছা ছিল। এখানে এসে খুব ভাল লাগছে। চারদিকটা ঘুরে দেখলাম। মানুষগুলো খুব ভাল।’’
দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরে সস্ত্রীক গিয়েছিলেন দিলীপ। সেই নিয়ে দলের একাংশের কটাক্ষের মুখে পড়েন তিনি। প্রশ্ন ওঠে তিনি, কি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন? সেই প্রসঙ্গে রিঙ্কু বলেন, ‘‘ওঁর মতো সৎ ব্যক্তি রাজনীতিতে দ্বিতীয় নেই বললেই চলে। নীতি আদর্শের সঙ্গে বিজেপি করেন তিনি। উনি কখনও তৃণমূলে যাবেন না। জগন্নাথ মন্দির দর্শনে গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।’’