• বক্সায় হরিণ হত্যা করে ভুরিভোজ, ধৃত তিন যুবক
    এই সময় | ০৬ মে ২০২৫
  • এই সময়, আলিপুরদুয়ার: হরিণ হত্যা করে ভুরিভোজ সারতে গিয়ে বন দপ্তরের জালে ধরা পড়ল তিন অভিযুক্ত। ঘটনাটি ঘটেছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প পূর্বের উত্তর রায়ডাক রেঞ্জের রায়ডাক চা বাগানের চার নম্বর সেকশনে। রবিবার রাতে একটি হরিণকে হত্যা করার পর চা বাগানের মধ্যেই মাংস কেটে রান্নাবান্না শুরু করেছিলেন ধৃতরা।

    গোপন সূত্রে ওই খবর পেয়ে ভুরিভোজের আসরে হানা দেন বনকর্মীরা। তাতেই বমাল পাকড়াও হয় অনিল টোপ্পো, কুশল কিসপোট্টা ও এটরেন মিঞ্জ নামে তিন অভিযুক্ত। তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার হয় রান্না করা হরিণের মাংস, রক্তের নমুনা ও হরিণের চামড়া।

    তিনজনের বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের আওতায় মামলা রুজু করেছে বন দপ্তর। সোমবার ধৃতদের আলিপুরদুয়ার জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত মঞ্জুর করেন। আর হত্যা করা হরিণটি ঠিক কোন প্রজাতির ছিল, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে প্রাণীটির রান্না করা মাংস, রক্তের নমুনা ও চামড়া কলকাতার জুলজিকাল অথিরিটি অফ ইন্ডিয়ার পরীক্ষাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।

    তিন বছর আগে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প পূর্বের জয়ন্তী রেঞ্জের জঙ্গলে গাদা বন্দুক দিয়ে একটি হরিণকে হত্যা করে নিয়ে যাওয়ার সময় বনকর্মীদের হাতে ধরা পড়ে যায় চুনিয়াঝোরা চা বাগানের তিন বাসিন্দা। তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার হয় তিনটি গাদা বন্দুক ও প্রচুর পরিমাণের গান পাউডার। ওই ঘটনায় তিন অপরাধীই এখন কারাগারে।

    তার আগের বছর বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প পশ্চিমের জঙ্গলে বাইসন হত্যা করে মাংস খাওয়ার অপরাধেও দু’জনের কারাদণ্ড হয়েছে। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বন দপ্তরের তরফে বার বার প্রচার চালানোর পরেও একশ্রেণির মানুষের হুঁশ না ফেরায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন বনকর্তারা।

    এ দিনের ঘটনা নিয়ে বক্সা ব্যাঘ্র পূর্বের উপক্ষেত্র অধিকর্তা দেবাশিস শর্মা বলেন, ‘প্রাথমিক ভাবে আমাদের মনে হচ্ছে হরিণটি বার্কিং অথবা চিতল হরিণ হতে পারে। পরীক্ষাগারের রিপোর্ট হাতে পেলেই তা সুনিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তবে বন্যপ্রাণ হত্যার দায়ে একের পর এক অপরাধীর কারাবাস হওয়ার পরেও ফের নতুন করে বনের আইন ভাঙছেন একশ্রেণির মানুষ। যা বন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে খুবই উদ্বেগের বিষয়।’

    আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের সম্পাদক ত্রিদিবেশ তালুকদার বলেন, ‘বারবার সতর্ক করার পরেও একশ্রেণির মানুষের চেতনা কিছুতেই ফিরছে না। অভিযুক্তদের কড়া সাজার দাবি করছি। পাশাপাশি বন দপ্তরকেও আরও বেশি করে সচেতনতা প্রচারের আবেদন জানাচ্ছি।’

  • Link to this news (এই সময়)