ধূমপান ডাকছে বিপদ, কলকাতায় প্রতি একশোয় হাঁপানিতে ভুগছেন ১০ জন!
প্রতিদিন | ০৬ মে ২০২৫
অভিরূপ দাস: প্রতি একশো জনের মধ্যে দশজন ভুগছেন হাঁপানিতে! শহর কলকাতা নিয়ে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চের সমীক্ষা চোখ কপালে তোলার মতো। বিশ্ব হাঁপানি দিবসে এই রিপোর্ট নিয়ে চিন্তিত ফুসফুস বিশেষজ্ঞরা।
হাঁপানি আদতে ফুসফুসের অসুখ। যার প্রধান উপসর্গ, নিশ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট, বুকের মধ্যে সাঁই-সাঁই শব্দ, রাত্তিরে শ্বাসকষ্ট। ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ধীমান গঙ্গোপাবায় জানিয়েছেন, ফুসফুসে বাতাস বহনকারী সরু সরু টিউবের মতো অজস্র নালি আছে, কোনও অ্যালার্জির কারণে এই সূক্ষ্ম নালিগুলোর মাংসপেশি সংকুচিত হয়ে পড়ে। শরীর তখন প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। শুরু হয় শ্বাসের সমস্যা। তা দেবেই হাঁপানি। ডা. ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হাঁপানি সাধারণত বংশগত রোগ। বংশে হাঁপানি থাকলে ধূমপান এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। প্যাসিভ ও সেকেন্ড স্মোকিং থেকেও অ্যাজমার অ্যাটাক হতে পারে। চিন্তার বিষয় সেখানেই।
জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বঙ্গের ৪৮.১ শতাংশ মানুষ তামাকে আাসক্ত। তার মধ্যে সিংহভাগই ধূমপান করেন। এখানেই শেষ নয়, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বয়স মাত্র পনেয়ে পেরিয়েই সিগারেটে সুখটান দিচ্ছেন বহু। এর মধ্যে রয়েছেন তরুণীরাও। কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. অরূপ চক্রবর্তী একটি সমীক্ষা তুলে ধরেছেন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ আর রিজিওনাল অকুপেশনাল হেলথ সেন্টার যৌথভাবে একটি সমীক্ষা করেছে। সেই সমীক্ষা তুলে ধরে ডা. অরূপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন কলতকাতার ১০০ জনের মধ্যে ৩৮ জন প্যাসিভ স্মোকিংয়ে আক্রান্ত। অর্থাৎ এঁরা নিজেরা ধুমপান করেন না, কিন্তু পাশের ধূমপায়ীর দ্বারা আক্রান্ত। বস্তি এলাকায় ৭৫ শতাংশ বাড়িতে প্রান্নাঘরে ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা নেই। এমনই নানাবিধ কারণে বাড়ছে হাঁপানি।
বাড়তে থাকা হাঁপানির জন্য বায়ু দূষণকে দায়ী করেছেন অরূপ চক্রবর্তী। জানিয়েছেন, “কোনও কিছুতে আলার্জি থাকলে, সেই উপাদানের সংস্পর্শে এলে দিতে পারে হাঁপানি। যাঁদের হাঁপানি রয়েছে তাঁরা ধুলো, ধোঁয়া, বাতাসে ভেসে বেড়ানো সূক্ষ্ম ধূলিকণা, ফুলের রেণু, পশুপাখির লোমের সংস্পর্শে এলে বেড়ে যেতে পারে শ্বাসকষ্ট। চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যাঁদের হাঁপানি রয়েছে, আবার সিগারেটও খান, তাঁদের ক্ষেত্রে চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে যায়। অনেকসময় ইনহেলারও কাজ করে না ঠিক মতো।