'থানায় নিয়ে গিয়ে জোর করে অপহরণের মিথ্যা অভিযোগ লিখিয়েছে পুলিশ'
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৬ মে ২০২৫
আমাকে পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ লিখতে বাধ্য করেছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার ভাড়াবাড়িতে তাঁরই পাশে দাঁড়িয়ে এই অভিযোগ করলেন মুর্শিদাবাদ দাঙ্গায় কুপিয়ে খুন হওয়া হরগোবিন্দ দাসের ছোট ছেলে সমর্থ দাস। সোমবার সন্ধ্যায় বিধাননগরে শুভেন্দুরবাবুর ভাড়াবাড়ির সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। তিনি স্পষ্ট জানান, হাইকোর্টে মামলা করতে স্বেচ্ছায় কলকাতায় এসেছেন তাঁর মা ও বউদি। পুলিশ যে অপহরণের অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
এদিন সমর্থ দাসের কাঁধে হাত রেখে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘এরা প্রথমে পুলিশের কাছে ৯ জনের নামে FIR করেছিল। দু’তিনজন গ্রেফতার হওয়া সত্বেও বাকিরা গ্রেফতার হয়নি। যে বিপুল পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমি নিজে চোখে দেখে এসেছি। তার ক্ষতিপূরণও হয়নি। এরা মূলত বিচার চান। রাজনৈতিক কারণে নয়, হিন্দু হওয়ার জন্যই এর বাবাকে ও দাদাকে খুন করেছে। সেটা বারবার এদের পরিবার বলেছে।’
তিনি জানান, ‘এরা পুলিশের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবি জানাতে কলকাতায় এসেছে। কিন্তু যে কায়দায় কালকে এখানে ঘর ভাঙা হয়েছে। সেখানে কয়েকজন মহিলা বাচ্চাদের নিয়ে ছিলেন। ওখানে তো প্রথমে অন্য কেউ ছিল না। ওদের বাড়ির ২ জন নাবালক ছাত্র তারাই কিন্তু প্রথম পুলিশকে বাধা দেয়। এর পর ১ ঘণ্টা সময় পেয়ে আইনজীবী, বিজেপি নেতারা সেখানে পৌঁছে যায়। সাধারণ মানুষ ও মানবাধিকার কর্মীরাও যুক্ত হয়। এরা একটা অসীম সাহসের সঙ্গে মাথা উঁচু করে নিজেদের বিক্রি করেনি। ইনি ও এঁর পরিবার ৩ বার সরকারি সাহায্যের ১০ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়ে বলেছেন। এই সরকার ও সরকারের পুলিশের জন্য আমার বাবা ও দাদার মৃত্যু হয়েছে।’
শুভেন্দুবাবুর অভিযোগ, ‘কালকে এই ঘটনার পরে হরগোবিন্দবাবুর ছোট ছেলেকে তুলে থানায় নিয়ে যায়। থানায় মিথ্যা FIR লেখায়। এবং একে দিয়ে ভিডিয়ো করে যে এর বাড়িতে পরশু দিন একটি কালো স্করপিও গাড়ি এসে জোর করে তাঁর পরিবারের লোককে তুলে নিয়ে আসে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মিথ্যা কথাটা বলেছে, তার পক্ষে সাজানোর জন্য রাজীব কুমারের বাহিনী এটা করে। পুলিশ চলে যাওয়ার পর উনি বহরমপুর থেকে বিধায়ক কাঞ্চন মৈত্রের সহযোগিতা নিয়ে উনি সরাসরি কলকাতায় পৌঁছয়। পৌঁছে ওনার মাকে ফোন করে। ওদের গেস্ট হাউজে যেহেতু এই অবস্থা তাই ভাড়াবাড়িতে ওদের তুলে নিই। কালকে বিধায়ক অশোক দিন্দা ও জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার পাহারা দিয়েছে সারা রাত ধরে। আজকেও ২ জন MLA এদের পাহারা দেবে পুলিশের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য। পুলিশ ওকে মিথ্যা বয়ান দিতে বাধ্য করেছিল। সেই বয়ান তারা প্রকাশ্যে এনেছে। আর উনি আজ আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন।’
এর পর নিহত হরগোবিন্দ দাসের ছোট ছেলে সমর্থ দাস বলেন, ‘আমাকে রাত পৌনে ১২টার সময় ঘরে আবার নিয়ে আসে। তার পর নিরাপত্তা কর্মীদের ডাকে। আমি শৌচাগারে গেলেও পিছনে নিরাপত্তারক্ষী থাকেন। বাড়িতে কোনও কাজ করতে গেলেও পিছু ছাড়ে না। আমার স্ত্রীকেও একই ভাবে অত্যাচার করেছে।’
সমর্থবাবুর অভিযোগ, ‘আমাকে দিয়ে লেখানো হয়, এই নামগুলো দেও, অপহরণের অভিযোগ করো। আমি বলি, অপহরণের কোনও ঘটনা তো ঘটেনি। আমার মা স্বেচ্ছায় এসেছে কলকাতায়। হাইকোর্টে কেস করার জন্য। আমাদের থানায় নিয়ে গিয়েছিল। আমাদের কেউ জোর করে আনেনি। আমার মা ও বউদি স্বেচ্ছায় কলকাতায় এসেছেন। এখানেও আমরা স্বেচ্ছায় রয়েছি।’