ভ্যান চালিয়েই সংসার চলে উত্তর ২৪ পরগণার বছর পঞ্চাশের বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়ের। তিন ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার উত্তর হাবড়ার এই বাসিন্দার। রুটি রুজি জোগানের একমাত্র সঙ্গী একটি ছোট ভ্যান। ভ্যানটি তাঁর কাছে প্রাণের থেকেও বেশি প্রিয়। প্রতিদিনই ভ্যানটি নিয়ে সামান্য কিছু রোজগারের আশায় বের হন বিশ্বনাথ। সোমবারও বেরিয়েছিলেন। কয়েক মিনিটের জন্য রাস্তার ধারে ভ্যানটিকে রেখে কাজে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রৌঢ়।
এ দিন হাবড়া যশোর রোড সংলগ্ন স্টেশন বাজার এলাকায় ‘রোজগারের বন্ধু’কে রেখে গিয়েছিলেন বিশ্বনাথ। কিন্তু কয়েক মিনিট পর সেখানে এসে ভ্যানটিকে আর দেখতে পাননি তিনি। এর পর হন্যে হয়ে এদিক ওদিক খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু ভ্যানটি আর পাননি। রাস্তাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন বিশ্বনাথ। দিশাহারা হয়ে শেষ পর্যন্ত হাবড়া পুলিশের দ্বারস্থ হন।
এত দিনের রক্ত-ঘাম ঝরানোর সঙ্গীকে হারিয়ে একেবারে ভেঙে পড়েন বিশ্বনাথ। থানায় বসেই অঝোরে কাঁদতে থাকেন তিনি। তাঁর বুকফাটা কান্না দেখে অস্বস্তিতে পড়ে যান পুলিশ আধিকারিকরাও। কেউ কেউ তাঁকে স্বান্ত্বনাও দেন। কিন্তু তাতেও শান্ত হননি বিশ্বনাথ।
তবে এর পর মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর চুরি যাওয়া ভ্যানটি উদ্ধার করে হাবড়া থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, স্টেশন বাজার এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেই এই চুরির সমাধান করেছে পুলিশ।
বলাই বাহুল্য, ভ্যানটি ফিরে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান বিশ্বনাথ। তিনি ধরেই নিয়েছিলেন, এতদিনের সঙ্গীকে আর পাবেন না। তাই পুলিশ যে তাঁর ভ্যানটি খুঁজে বের করেছে, তা প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি বিশ্বনাথ। তবে ভবিষ্যতে যাতে আর সেটি চুরি না হয়, তার জন্য এ বার থেকে তিনি ভ্যানে তালা লাগিয়ে রাখবেন বলে জানিয়েছেন। সাধের ভ্যানটি উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য হাবড়া থানার পুলিশ আধিকারিকদেরও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।