• জাতপাত, ধর্মের পর এ বার বর্ণ বিভাজন! নতুন সুর বিজেপি নেতৃত্বের গলায়...
    আজকাল | ০৭ মে ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি: আবারও বিভাজনের সুর বিজেপির নেতৃত্বের  গলায়। জাত-ধর্মের পর এবার বিজেপির বর্ণ বিভাজনের রাজনীতি প্রকাশ্যে। বিজেপি মুখপাত্রের মুখে প্রকাশ্য সভায় শোনা গেল ঘটি-বাঙ্গাল বিভাজনের কথা। পাল্টা তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া, হিন্দু-মুসলিমে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা সফল হয়নি বিজেপির। তাই এ বার ঘটি-বাঙালেও বিভাজন করতে চাইছে।

    সোমবার সন্ধ্যায় বিজেপির এক কর্মসূচিতে যোগ দিতে চুঁচুড়ায় এসে প্রকাশ্যে পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসা মানুষদের তীব্র কটাক্ষ করেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। সভায় বিজেপি মুখপাত্র তথা সাংসদ শমীক বলেন, "শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ওপার বাংলার মানুষ ছিলেন না। তিনি পিওর ঘটি ছিলেন। তিনি কট্টর মোহনবাগান সমর্থক ছিলেন। তার জন্যই পশ্চিমবঙ্গ আছে, যে মাটিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী এখন কথা বলেন।" একইসঙ্গে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "ওপার বাংলা থেকে চলে এল কেন? ওপার থেকে যারা এসেছে তারা বলে এত নারকেল বাগান আছিল। পুকুরে রুই, কাতলা ঘুরতো, নাকে নোলক পড়া। ওখানে উইঙ্কেল টুইঙ্কেল হয়নি। ওখানে সিনেমার মত হয়নি। ওখানে ব্রাত্যজনেরা রুদ্ধ সংগীত বানাতে পারেনি। ওখানে বোমা ফাটাতে পারেনি। তাহলে এরাজ্যে এলেন কেন?" 

    প্রসঙ্গত, কাশ্মীরের পহেলগাঁও ঘটনার পর বিজেপি নেতৃত্বকে বারবার বলতে শোনা যাচ্ছে, ''যারা পূর্ববঙ্গ থেকে এসেছিলেন, তাঁরা কেন এসেছিলেন। সেটা তাঁরা বলুক। পূর্ববঙ্গের মুসলিমদের অত্যাচারের ফলেই তাঁরা ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন।'' 

    বিজেপি নেতৃত্বের মুখে মুখে প্রচারিত এই তথ্য সম্পর্কে জেলার রাজনৈতিক মহলের ধারণা বিজেপির এই বক্তব্যের মধ্যে, একটা দয়া করে জায়গা দেওয়া হয়েছে এমন মনোভাব ব্যক্ত হচ্ছে। যেটা মোটেই অভিপ্রেত নয়। পূর্ববঙ্গ পশ্চিমবঙ্গ বিভাজনের সময় বিজেপি দলটার কোনও অস্তিত্ব ছিল কি না, জানা নেই। তাহলে ওদের দয়া করার প্রসঙ্গ উঠছে কেন। 

    এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেছেন, "বিজেপি সব সময় বিভাজনের রাজনীতি করে। আগে হিন্দু মুসলিম বিভেদের চেষ্ঠা করেছে। সফল হয়নি। এবার ঘটি-বাঙাল বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তাই যাঁরা পূর্ববঙ্গ থেকে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করছে। যেন তেন প্রকারে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা আসার জন্য ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসি নিয়েছে।" 

    তিনি আরও বলেন, "রাজ্যের মানুষ প্রমাণ করেছেন, তাঁরা জাতি- ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে রয়েছে। কারণ, তিনি মানুষের জন্য কাজ করেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ দেখেন না। আর বিজেপি কখনও ধর্মের নামে, কখনও বর্ণের নামে বিভেদ তৈরি করে চলেছে। ওরা গন্ডগোল, দাঙ্গা লাগিয়ে পরিবেশ অশান্ত করে যে কোনও উপায়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। ওদের এই চক্রান্ত সফল হবে না। বাংলার মানুষ সেটা হতে দেবে না।"

    ছবি পার্থ রাহা।
  • Link to this news (আজকাল)