• ‘আপনাদের গায়ে আঁচ লাগতে দেব না’, সুতিতে ওয়াকফ নিয়ে আশ্বাস মমতার
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৭ মে ২০২৫
  • ওয়াকফ নিয়ে কেন্দ্র সরকার নতুন আইন তৈরি করলেও তার প্রভাব যে বাংলায় পড়বে না, তা ফের জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, নতুন ওয়াকফ আইন রাজ্যে কার্যকর করতে দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার সুতিতে ফের একই দাবি করলেন তিনি। এদিন মমতা বলেন, ‘কেন্দ্র আইন করুক, আপনাদের গায়ে আঁচ লাগতে দেব না’।

    মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়ে সুতির প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা, ‘রাজ্য সরকার কোনও ধর্মেরই সম্পত্তি অধিগ্রহণের পক্ষে নয়। আমরা সবাই সংশোধনীর বিরোধিতা করেছিলাম। কিন্তু কেন্দ্র শোনেনি। আইন করে দিয়েছে। তা কেন্দ্র আইন করলে করুক। আমি এখানে যতদিন আছি, না হিন্দু, না মুসলমান, না বৌদ্ধ, না খ্রিস্টান – আপনাদের কারও গায়ে আঁচ লাগতে দেব না।’

    যদিও ওয়াকফ ইস্যুতে অশান্তির নেপথ্যে পূর্বেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহিরাগত শক্তিকে দায়ী করেছিলেন। মঙ্গলবারও একই অভিযোগ করেছেন তিনি। বলেন, অন্যের উসকানি ও প্ররোচনায় মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এবিষয়ে জনগণকে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়াকফ নিয়ে আমাদের এখানে কোনও প্রশ্ন নেই। এই নিয়ে আমি আর কিছু বলব না। ওয়াকফ নিয়ে আপনাদের কিছু বলার থাকলে দিল্লিতে যান। বাংলায় আমি আছি, মাথায় রাখবেন। আমি যতদিন আছি, আপনারা কারও কথায় নিজেদের মধ্যে অশান্তি করবেন না। আজ আমায় কথা দিন।’

    প্রসঙ্গত ওয়াকফ আইন সংশোধনী নিয়ে গঠিত হয় যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)। সেখানে কেন্দ্রের শাসকদলের পাশাপাশি ছিলেন তৃণমূল ও কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। কিন্তু সমস্ত বিরোধিতা উড়িয়ে সংসদে পাশ হয়ে যায় নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইন। জেপিসি-র বিরোধী সদস্যরা অভিযোগ করেন, তাঁদের দাবি না মেনে জোর করে এই সংশোধনী বিল আনা হয়েছে। তাঁদের একাধিক বিষয়ে আপত্তির কথা শোনেনি কেন্দ্র সরকার। একজন সাংসদ অভিযোগ করেন, নতুন এই আইনে দেশের মুসলিম সমাজকে ধর্ম পালনে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এরপরই এই সংশোধনী আইন নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদ ও অশান্তি শুরু হয়। বাদ যায়নি পশ্চিমবঙ্গও। মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহ রাজ্যের একাধিক জায়গা উত্তপ্ত হয়। মুর্শিদাবাদের সুতি, সামসেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। যার জেরে মুর্শিদাবাদে তিন জনের মৃত্যু হয়।

    এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি রুখে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বলেন, ‘দাঙ্গা মানে মানুষের বাড়ি পোড়া, রক্ত ঝরা। আমি দাঙ্গার পক্ষে নই, মানুষের পক্ষে।বিজেপি কিংবা কোনও মৌলবাদী সংগঠনের কথা শুনে প্ররোচিত হবেন না। দাঙ্গা আপনারা করবেন, আমি কেন তার দায় নেব? রাজ্য সরকার কিছুতেই বরদাস্ত করবে না।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)