প্রায় প্রতি মাসেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে রাজ্যের বিভিন্ন রুটের বাস। এর জেরে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। বারবার চালকদের সচেতন করেও রেষারেষি বন্ধ করা যায়নি। ফলে রাশ টানা যায়নি দুর্ঘটনাতেও। এহেন পরিস্থিতিতে বাস দুর্ঘটনায় রাশ টানতে নতুন অ্যাপ আনছে পরিবহন দপ্তর। আগামী শনিবার এই অ্যাপ চালু করা হবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে পুলিশ ও পরিবহন দপ্তর যৌথ ভাবে বাসের গতির উপর নজর রাখতে পারবে। ‘হোয়ার ইজ মাই বাস’ থিমকে সামনে রেখে নতুন এই অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপটির নাম ‘যাত্রী সাথী ড্রাইভার’। এর ফলে বাস দুর্ঘটনা কমবে বলে মনে করছেন পরিবহন দপ্তরের আধিকারিকেরা।
চালককে বাস পরিষেবা শুরুর আগে এই অ্যাপে লগ ইন করতে হবে। অ্যাপের মাধ্যমেই পুলিশ ও পরিবহন দপ্তর যৌথ ভাবে সংশ্লিষ্ট বাসের গতির উপর নজর রাখতে পারবে। আপাতত কলকাতা বিমানবন্দর রুটে চলাচল করা ১০টি সরকারি এবং ১০টি বেসরকারি বাসকে নতুন এই অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে আস্তে আস্তে কলকাতা ও শহরতলির সব বাসকেই এই অ্যাপের আওতায় আনা হবে। এজন্য বাসচালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। ৪৫ এবং ২২৩ নম্বর রুটের বাসের চালকরা এই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সিটি সার্বাবান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘আমরাও চাই বাস দুর্ঘটনা বন্ধ হোক। দুর্ঘটনা কমাতে রাজ্য সরকার যে সব পদক্ষেপ করবে, আমরা সহযোগিতা করব। নতুন অ্যাপ চালু করার ক্ষেত্রেও আমরা দপ্তরকে সবরকম ভাবে সাহায্য করেছি।’
বহু ক্ষেত্রে তদন্ত করে দেখা গিয়েছে, বাসের বেপরোয়া গতিই দুর্ঘটনার কারণ। বাসচালকরা অ্যাপে লগ ইন করে রাখার কারণে পুলিশ ও পরিবহন দপ্তর যৌথ ভাবে বাসের গতির উপর নজর রাখতে পারবে। কোনও ক্ষেত্রে যদি বাসের চালক গতি বাড়িয়ে বেপরোয়া ভাবে বাস চালান, তাহলে তা সহজেই চিহ্নিত করা যাবে। আবার কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার কারণ অস্বাভাবিক গতি কি না, সেটা বোঝা যাবে। গণ পরিবহন ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে কতটা দুর্ঘটনা রোধ করা যাবে, সেটাই এখন দেখার।
সূত্রের খবর, প্রত্যেক বাস চালকের মোবাইলে সেই অ্যাপ চালু রাখাটা বাধ্যতামূলক করা হবে। সকাল থেকে তাঁদের ট্র্যাকিং করবে ট্র্যাফিক পুলিশ। চালক কী গতিতে গাড়ি চালাচ্ছেন, বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছেন কি না, সে সব কিছুই ট্র্যাক করা যাবে ওই অ্যাপের মাধ্যমে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা-সহ শহরতলিতে গত কয়েক বছরে লাফিয়ে বেড়েছে বাস দুর্ঘটনার সংখ্যা। লালবাজার সূত্রে খবর, কলকাতায় ২০২২ ও ২৩-এ বেসরকারি বাস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ২১ ও ২৪। সেখানে ২০২৪ সালে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৭ জন।