স্বাধীনতার আগে তৈরি গঙ্গারামপুর হাইস্কুলের ভবনে যেতে বুক কাঁপে শিক্ষক-ছাত্রছাত্রীদের
বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, গঙ্গারামপুর: ভবনের সামনে গেলে বুক কাঁপতে বাধ্য। কারণ চরম বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে গঙ্গারামপুর হাইস্কুল ভবন। বারবার চাঙড় ভাঙলেও সাত বছর ধরে আবেদন করে মিলছে না ভবন নির্মাণের টাকা। স্বাধীনতার আগে তৈরি এই স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে একাধিক অভিযোগ অভিভাবক সহ শিক্ষকদের।
১৯৩৩ সালে বেড়ার ঘরে শুরু হয় পঠনপাঠন। ১৯৫২ সালে চুনসুরকি দিয়ে তৈরি দোতলা ছাদের চাঙড় ভেঙে পড়ছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকার কারণে গঙ্গারামপুর হাইস্কুলের অফিস তথা শিক্ষকদের কমনরুম থেকে শুরু করে প্রধান শিক্ষকদের বসার ঘর এখনও ভগ্নদশা। প্রত্যেকদিন স্কুলের পড়ুয়া থেকে শিক্ষকেরা স্কুলে এসে প্রাণ হাতে পঠনপাঠন চালিয়ে যাচ্ছেন।
জেলার মধ্যে অন্যতম প্রাচীন এই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। তাঁর স্কুলের এমন বেহাল দশার কথা শুনে অবাক হচ্ছেন অনেকেই। একটা সময় জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা দপ্তর স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ করত। সেই বরাদ্দ এখন রাজ্য শিক্ষা দপ্তর করে। জেলা থেকে বারবার গঙ্গারামপুর স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য আবেদন জানালেও অজানা কারণে ফাইল চাপা পড়ে থাকছে বলে অভিযোগ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহুলদেব বর্মন বলেন, আমাদের স্কুলের অফিস, শিক্ষকদের কমনরুম ও প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় পুরনো ভগ্নদশা ভবনে। তার উপরের ক্লাসরুম পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বন্ধ করে দিয়েছি। ২০১৮ সাল থেকে জেলা শিক্ষা দপ্তরে ভবন সংস্কারের জন্য আবেদন জানাচ্ছি। বিষয়টি জেলা শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিক দেখে গিয়েছেন। আমরা সংস্কারের বিষয় নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রীর কাছে দরবার করব।
বর্তমানে স্কুলটিতে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আড়াই হাজার পড়ুয়া। তাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ভগ্নদশা ভবনের দোতলায় ৭ টি রুমে ডিজিটাল ক্লাস কয়েক বছর বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এবার স্কুলে শুরু হয়েছে একাদশ শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়া। অফিস রুমে ভিড় করছে পড়ুয়ারা। সেই সময় ছাদের চাঙর ভেঙে পড়তে দেখা যাচ্ছে। বড় অঘটনের আশঙ্কা করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিকল্প ঘর না থাকায় পুরনো বিল্ডিংয়েই চলছে কাজকর্ম।
মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, ভবনের এমন ভগ্নদশার কথা স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাকে কোনওদিন জানায়নি। সমস্যা থাকলে গুরুত্ব সহকারে সমাধানের ব্যবস্থা করব। জেলা স্কুল পরিদর্শক (উচ্চ মাধ্যমিক) দেবাশীষ সমাদ্দারের কথায়, গঙ্গারামপুর স্কুলের ভবনের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। নিজে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে এসেছি। বিষয়টি রাজ্য শিক্ষা দপ্তরে জানানো রয়েছে। আমরা যোগাযোগ রাখছি। আশাকরি দ্রুত বরাদ্দ হবে। নিজস্ব চিত্র।