কোচবিহারজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্থাপত্য, প্রাচীন নিদর্শনের খোঁজ শুরু
বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: কোচবিহারকে হেরিটেজ শহর হিসেবে গড়ে তোলার কাজ আগেই শুরু হয়েছিল। সেই কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। এবার শহর ছাড়িয়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রাজআমলের বা প্রাচীনকালের সমস্ত নির্দশনের তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত হল। মঙ্গলবার হেরিটেজ কমিটির মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই সঙ্গে কোচবিহারের দু’টি জায়গায় হেরিটেজ স্থাপত্যে মিউজিয়াম ও কোচবিহারের ইতিহাসকে তুলে ধরা হবে। এর মধ্যে সাবিত্রী লজ ও পূর্তদপ্তর যেমন আছে, তেমনই খাসমহলও রয়েছে। এছাড়াও শহরের বেশ কয়েকটি দিঘি সংস্কারের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কোচবিহারের জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা, হেরিটেজ কমিটির জেলা পৃষ্টপোষক তথা কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, হেরিটেজ কমিটির সহকারী পৃষ্টপোষক বিনয়কৃষ্ণ বর্মন সহ অন্যান্য বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা।
জেলাশাসক বলেন, কোচবিহার শহরের বাইরে রাজআমলের যেসব স্থাপত্য আছে তার তালিকা বানিয়ে কমিশনকে পাঠানো হবে। আমরা এদিন ৪৮টি প্রকল্পে ৩০ কোটি টাকা কাজের প্রস্তাব গ্রহণ করেছি।
হেরিটেজ কমিটির জেলা পৃষ্টপোষক বলেন, জেলার কোথায় কত হেরিটেজ সম্পত্তি রয়েছে তার তালিকা প্রস্তুত করা হবে। বিভিন্নভাবে এই তালিকা সংগ্রহ করা হবে। সেই তালিকা হেরিটেজ কমিশনের কাছে পাঠাব আমরা।
কোচবিহার জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রাজআমলের বহু নিদর্শন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। মন্দির, পুরনো স্থাপত্য থেকে শুরু করে নানা ধরনের সামগ্রী সেসব জায়গায় রয়েছে। এরমধ্যে কিছু স্থাপত্য বেহাল অবস্থায়। কিছু ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক স্থাপত্যও বেহাল হয়ে রয়েছে। বহুদিন থেকেই এগুলির সংস্কারের দাবি রয়েছে। কীভাবে এসব সংস্কার করা যায় তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এদিন হেরিটেজ কমিটির আলোচনায় বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হল। প্রথমে তালিকা তৈরি করে তা পাঠানো হবে কমিশনের কাছে।
জেলার বাণেশ্বর মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, গোঁসাইগঞ্জের কালীমন্দির সহ একাধিক জায়গায় বহু প্রাচীন মন্দির আছে। ধলুয়াবাড়ির স্থাপত্য, মাথাভাঙা স্কুল, লাইব্রেরি, তুফানগঞ্জে চিলারায়ের গড়, গোবরাছড়ার শিবমন্দির, ভেটাগুড়ি, আঠারোকোঠার কালপানি এলাকার রাজধানী, এলাজানের শিবমন্দির, নিশিগঞ্জের নৌকা সহ বহু জায়গায় বহু স্থাপত্য রয়েছে।
কোচবিহার শহরে আগেই সাগরদিঘি ও বৈরাগীদিঘির সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু করা হয়েছিল। তারমধ্যে বৈরাগীদিঘির কাজ শেষ হয়েছে। সাগরদিঘির সৌন্দর্যায়নের কাজ সামান্য বাকি। এবার হেরিটেজের ইতিহাসকে এক জায়গায় তুলে ধরার পাশাপাশি জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা স্থাপত্য, নির্দেশনের তালিকা প্রস্তুত করে আগামীদিনে তা সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হলে ইতিহাসের বহু স্মারক সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। বাণেশ্বর মন্দির। - নিজস্ব চিত্র।