নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: মাধ্যমিকে ভালো ফল করে নজরে জলপাইগুড়ির ট্রিপলেট ভাই-বোন। শহরের শিল্পসমিতি পাড়া সংলগ্ন সুহৃদ লেনের বাসিন্দা ওই তিনজনই সরকারি ইংরেজি মাধ্যম থেকে এবার মাধ্যমিক দেয়। তাদের নজরকাড়া সাফল্যে খুশি স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি অভিভাবক, পাড়াপ্রতিবেশীরা।
তিনজনের মধ্যে এক বোন আরাধিতা গোস্বামীর প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৭। জলপাইগুড়ি সুনীতিবালা সদর গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সে। প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে স্কুলে দ্বিতীয় হয়েছে আরাধিতা। পড়াশোনার ফাঁকে তার শখ, গল্পের বই পড়া। ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায় সে। আরএক বোন শুভমিতার প্রাপ্ত নম্বর ৬৫৩। সেও সদর গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী। প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে স্কুলে পঞ্চম হয়েছে সে। শুভমিতার প্রিয় বিষয় অঙ্ক। পড়াশোনার অবসরে ছবি আঁকতে ভালোবাসে সে। বড় হয়ে অবশ্য ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় শুভমিতা। অন্যদিকে, আরাধিতা ও শুভমিতার ভাই নবাঙ্কুর জলপাইগুড়ি ফণীন্দ্রদেব ইন্সটিটিউশনের ছাত্র। মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬১২। নিজের স্কুলে তৃতীয় হয়েছে সে। অবসরে ছবি আঁকতে ও ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করে নবাঙ্কুর। শুভমিতার মতো সেও ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। সেইমতো এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় তার পড়াশোনা।
মা বনশ্রী চক্রবর্তী ফালাকাটার একটি স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা। বাবা নরেশ গোস্বামী পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক। বতর্মানে ময়নাগুড়ির মাধবডাঙা-১ পঞ্চায়েতে কর্মরত। ট্রিপলেট ছেলেমেয়ের সাফল্যে খুশি তাঁরা। বনশ্রীদেবী বলেন, তিনজনকে একসঙ্গে বড় করে তোলা মুখের কথা নয়। তবে এতদিনে মনে হচ্ছে, ছেলেমেয়েদের নিয়ে লড়াইয়ের প্রথম ধাপ পেরতে পারলাম। এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি। আমি চাই, ছেলেমেয়েরা নিজেদের মতো করেই পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাক। ওদের যেটা পছন্দ, সেইমতো বিষয় নির্বাচন করুক। চাপিয়ে দেওয়ার কোনও অর্থ হয় না।
বাবা নরেশ গোস্বামী বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী দু’জনকেই কর্মসূত্রে সারাদিন বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার জগতেই থাকে। অবসর সময়ে ওরা কেউ ছবি আঁকে, কেউ গল্পের বই পড়ে। কেউ আবার খেলাধুলো করে। মাধ্যমিকে ওদের রেজাল্টে আমরা খুশি। তাঁর কথায়, ছোট থেকেই দেখেছি, তিন ভাইবোনের একে অপরের সঙ্গে বোঝাপড়াটা খুব ভালো। তাছাড়া পছন্দ অপছন্দের ক্ষেত্রেও অনেক মিল। একজনের শরীর খারাপ হলে, অন্য দু’জনেরও সেটা হবে।