তৃষ্ণা মেটেনি পুরুলিয়া শহরের জলই ডোবাচ্ছে তৃণমূলকে, শঙ্কা
বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: রাজনীতির কারবারিরা অনেকেই মনে করেন, গত লোকসভা নির্বাচনে জলই ডুবিয়েছিল তৃণমূলকে। পুরুলিয়া শহর থেকেই বাজিমাত করেছিল বিজেপি। আগামী বছর ফের বিধানসভা নির্বাচন। এখনও পুরুলিয়া শহরের সেই জলের সমস্যা ঘুচল না। শাসক দলের দুর্নীতি কিংবা নেতাদের কোন্দলই নয়, পুরুলিয়ায় তৃণমূলের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ পানীয় জলের সঙ্কট বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ফি গ্রীষ্মেজলের জন্য হাহাকার শুরু হয় পুরুলিয়াশহরে। বহু ওয়ার্ডেই গরমে হাঁড়ি-কলসি নিয়ে পথে নামেন মানুষজন। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পুরসভার প্রতিনিধিরা আসেন। প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি পেয়ে অবরোধ ওঠে। তবে জল মেলে না। দুর্ভোগ রয়েই যায়।মনের মধ্যে জমে থাকা ক্ষোভ বাসিন্দারা উগরে দেন ব্যালটে। শাসকের হাজার উন্নয়ন সত্ত্বেও জলের এই জ্বলন্ত সমস্যাকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক ফায়দা লোটে বিজেপির। রাজনৈতিক প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রীও বলেন, ‘পুরুলিয়ার লোকের কী জলকষ্ট!’পুরুলিয়া পুরসভায় মোট ৩৫হাজার পরিবার বসবাস করে। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১৬হাজার পরিবারে নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছেছে।তাও প্রতিদিন জল মেলে না। বহু ট্যাপেজল পড়ে সরু সুতোর মতো। জলের সংযোগ দেওয়ার নাম করে বাসিন্দাদের থেকে দু’হাজার টাকা করে নিয়েছে পুরসভা। যদিও তা বিনামূল্যেই দেওয়ার কথা ছিল। তবে পরিস্রুত জল পেতে বাসিন্দারা তাও দিতে পিছপা হননি। কিন্তু ৬, ৭, ৯ এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় তিন হাজার পরিবার টাকা দিয়েও আজও জল পাননি। এনিয়ে বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। শধু তাই নয়, শহরের আবাসনগুলিতে এখনও জল পৌঁছয়নি। আবাসনের বাসিন্দারা এনিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন চেয়ারম্যানের কাছে। পুরসভার কাউন্সিলার সুনয় কবিরাজ, বিভাসরঞ্জন দাসরা মানছেন, পুর পরিষেবা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ আছে। পানীয় জলের দাবি এখনও মেটানো সম্ভব হয়নি। রাস্তায় বেরলে বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।
চেয়ারম্যানের নব্যেন্দু মাহালির দাবি, পুরুলিয়া শহরে জলের অন্যতম উত্স কংসাবতী নদী। কিন্তু গ্রীষ্মে নদী শুকিয়ে যায়।নদীর বালির স্তরে যে জল সঞ্চিত থাকে, সেই জলই পাম্পের সাহায্যে তুলে শহরবাসীকে দেওয়া হয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিকভাবে কংসাবতী থেকে বালি উত্তোলনের ফলে জলের সেই ভাঁড়ারেও টান পড়েছে। চেয়ারম্যানের দাবি, জাইকা প্রকল্পের কাজ চলছে জোর কদমে। আশা করছি সেই প্রকল্প চালু হয়ে গেলে জলের আর সমস্যা থাকবে না।