• সেচ দপ্তরের বিরুদ্ধে সরব বাঁকুড়ার সাংসদ, দুর্গাপুর ব্যারাজের রাস্তা সংস্কারে ঢিলেমির অভিযোগ
    বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ায় বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণে সেচদপ্তরের একাংশের উদাসীনতা নিয়ে সরব হলেন সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে দপ্তরের আধিকারিকরা টালবাহানা করছেন বলেও অরূপবাবু অভিযোগ তোলেন। দুর্গাপুর ব্যারেজের রাস্তা সংস্কার থেকে মজে যাওয়া গন্ধেশ্বরী, শিলাবতী নদীর ড্রেজিং, সবকিছুতেই আধিকারিকদের একাংশ কার্যত গাছাড়া মানসিকতা দেখাচ্ছে বলে সাংসদ তোপ দেগেছেন। এমনকী, সেচমন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও আধিকারিকরা ঢিলেমি দিচ্ছেন বলে তাঁর অভিযোগ। প্রয়োজনে ফের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, এমনকী মুখ্যমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানানো হবে বলে অরূপবাবু জানিয়েছেন। 

    অরূপবাবু বলেন, আমি জনপ্রতিনিধি। সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা আমাকে মাথায় রাখতে হয়। দুর্গাপুরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। মন্ত্রী ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা বলা সত্ত্বেও ব্যারেজের রাস্তা সংস্কারের কাজে গতি আসছে না। ৪৫ দিনের মধ্যে ওই কাজ সম্পূর্ণ করার কথা রয়েছে। তা না হলে বর্ষা নেমে যাবে। তখন আর কাজ করা যাবে না। সেচমন্ত্রী দুর্গাপুর ব্যারেজের কাছে শিবির করে কাজের তদারকি করার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা থাকছেন না বলে আমরা জানতে পেরেছি। মাঝেমধ্যে সুপারিনটেডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার পদমর্যাদার এক আধিকারিক একা বসে থাকলেও বাকিরা থাকছেন না। বছর পাঁচেক আগে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ওই ব্যারেজের রাস্তা সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেইসময় ১২টি গেট পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছিল। কাজ শুরু হলেও তদারকির লোকের অভাব রয়েছে। মানুষের কোনও অসুবিধা যাতে না হয়, তা দেখার জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রী বার বার বলে থাকেন। 

    এছাড়াও গন্ধেশ্বরী ও শিলাবতী নদীতে একাধিক ড্যাম তৈরির কথা বলা হয়েছিল। ওই দুই নদীর পাশাপাশি শালী নদীও মজে গিয়েছে। ফলে সেগুলি ড্রেজিং করা প্রয়োজন। তার প্রস্তাব সেচদপ্তরে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু আধিকারিকরা কাগজ খুঁজে পাচ্ছেন না বলে আমাকে জানিয়েছেন। ওই দপ্তরের জেলা স্তরের আধিকারিকদের একাংশ এব্যাপারে উদাসীন রয়েছে। তাঁরা সরকারি টাকা খরচ করে নদী পরিষ্কার করতে চাইছেন। পিপিপি মডেলে সরকারের কোষাগার থেকে টাকা না খরচ করেও নদী ড্রেজিং করা সম্ভব। তাতে শুধু রাজ্য সরকারের টাকা খরচ হবে না, উল্টে ঘরে রাজস্ব আসবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, সেটা কিছু অফিসার চাইছেন না বলে অরূপবাবুর অভিযোগ।

    এ ব্যাপারে সেচদপ্তরের বাঁকুড়া ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার শুভাশিস পাত্র বলেন, আমরা সঠিকভাবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ করে থাকি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।

    দুর্গাপুর ব্যারেজ সংস্কারের দায়িত্বে থাকা সেচদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, সেতুর রাস্তা দীর্ঘদিন মেরামত করা হয়নি। ফলে পিচ তুলে ফেলতে হচ্ছে। সেতুর মধ্যে থাকা একাধিক কংক্রিটের স্ল্যাবের জয়েন্টেও কাজ করতে হচ্ছে। সেই কারণে একটু সময় লাগছে। বর্ষার আগেই সিংহভাগ কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।  বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, সেচদপ্তর কাজ শুরু করতেই দেরি করেছে। জুন মাসেই এ রাজ্যে বর্ষা নেমে যায়। তার আগে ব্যারেজের সংস্কার কাজ শেষ করা মুশকিল আছে।  ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)