• পরিবহণের সময় সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই রাস্তায়
    বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই পরিবহণের গাড়িগুলি থেকে রাস্তায় পড়ছে। যার ফলে ক্রমাগত দূষণ ছড়াচ্ছে। সেই ছাই সরাসরি পথ চলতি মানুষের চোখে, মুখে ঢুকছে। ফলে তাঁরা অ্যাজমা, চোখের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছেন। পাশাপাশি সর্বক্ষণ ভারী যানবাহন চলাচল করায় এলাকায় ব্যাপক মাত্রায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যা নিয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভে ফুঁসছেন। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে আগামী দিনে এলাকার বাসিন্দারা বৃহত্তম আন্দোলনে নামবে বলে জানিয়েছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই নিয়ে প্রতিদিন কয়েকশো ডাম্পার, লরি যাতায়াত করে। পাশাপাশি কন্টেনারে করেও ছাই নিয়ে যাওয়া হয়। সেই ছাই বিভিন্ন সিমেন্ট কারখানা, ইট তৈরির কারখানা ও জমি ভরাটের মতো কাজে ব্যবহার করা হয়। অভিযোগ, প্রতিটি ছাই পরিবহণকারী গাড়ি ওভারলোডেড থাকে। সেই গাড়িগুলি চলাচলের জন্য এলাকার রাস্তাগুলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সময়, অসময়ে ছাই পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে সাধারণ মানুষের যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে। গাড়িগুলি থেকে ছাই রাস্তায় পড়ছে। 

    পরবর্তী সময়ে সেই ছাই বাতাসে উড়ে সরাসরি পথ দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষদের চোখে, মুখে ঢুকছে। যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

    এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সুব্রত সিং, গৌরীশংকর চৌধুরী, প্রভাসচন্দ্র মাহাত বলেন, সাঁওতালডিহি ১ নম্বর গেট থেকে পাহাড়ীগোড়া মোড় পর্যন্ত ছাই পরিবহণের গাড়িগুলি যাতায়াত করছে। রাস্তাটি অতি সংকীর্ণ। বড় বড় ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে গাড়িগুলি থেকে ছাই উড়ে এলাকায় দূষণ ঘটাচ্ছে। 

    তৃণমূলের তথা আইএনটিটিইউসির জেলা সহ-সভাপতি বরুণ মাহাথা বলেন, একসময় রেলের রেকের মাধ্যমে ছাই পরিবহণ করা হতো। সেখানে প্রায় এক হাজারের মতো শ্রমিক কাজ করত। ফলে এলাকায় দূষণ থেকে যানজট কিছুই হতো না। বর্তমানে রেক পরিবহণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন বড় বড় গাড়ি রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। রাস্তাগুলির দফারফা হয়ে গিয়েছে। সংকীর্ণ রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়, কলেজের ছাত্রছাত্রীরা আসা যাওয়া করে। ফলে যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিজেপি বিধায়ক নদিয়ারচাঁদ বাউরি বলেন, ছাই থেকে শুরু করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে রাজ্য সরকার মুনাফা লাভ করছে। অথচ এলাকার মানুষ ছাইয়ের দূষণ খাচ্ছে। জমিহারাদের কর্মসংস্থান নেই। রাস্তাগুলি ছাই পরিবহণ গাড়িতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রায় তিনমাস হল রেক পরিবহণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই যানজট এখন নতুন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

    সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তরফে অভিজিৎ নন্দী বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনে দূষণ এড়িয়ে ছাই পরিবহণ করা হয়। তবে যানজটের সমস্যার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তাই অফিস টাইমে যাতে ছাই পরিবহণ গাড়িগুলি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)