কোর্টের নির্দেশে আজ সাগরপাড়া পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন
বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, ডোমকল: বোর্ড গঠনে অনিয়মের প্রমাণ মেলায় সাগরপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। বিচারপতি জানিয়েছিলেন, একমাসের মধ্যে পুরনো প্রধানকে সরিয়ে নতুন করে প্রধান নির্বাচন করতে হবে। সেই নির্দেশমতো বুধবার সাগরপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচন হতে চলেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় এই বোর্ডের দখল রাখাই তৃণমূলের কাছে চ্যালেঞ্জ। শাসকদল কিছুটা ব্যাকফুটে থাকলেও ঘুঁটি সাজিয়ে তৈরি বিজেপি। অশান্তি এড়াতে পুলিস কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। প্রধান নির্বাচনকে ঘিরে পঞ্চায়েত অফিস ও তার চারপাশে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকছে।
২০২৩সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাগরপাড়ায় বিজেপি ১৬টি, কংগ্রেস ও সিপিএম পাঁচটি করে ও তৃণমূল চারটি আসন পেয়েছিল। কিন্তু দেখা যায়, তৃণমূল ওই বোর্ডের দখল নিয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, ঘাসফুল শিবির ১৩সদস্যের সমর্থনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। বিজেপি ১২সদস্যের সমর্থন পেয়েছে। সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া বৈশাখী মণ্ডল প্রধান নির্বাচিত হন। এরপরই বিজেপি বেআইনিভাবে বোর্ড গঠনের অভিযোগে সরব হয়। পদ্ম শিবিরের দাবি ছিল, তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও সরকারি আধিকারিকরা ব্যালট নষ্ট ও কারচুপি করে বেআইনিভাবে বোর্ডে তৃণমূলকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছিল। ওইদিন বোর্ড গঠন ঘিরে পঞ্চায়েতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি দেখা দেয়। এরপরই বিজেপি বোর্ড বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। ৮এপ্রিল হাইকোর্ট সমস্ত প্রমাণ খতিয়ে দেখে প্রধান বৈশাখী মণ্ডলকে অপসারণ করে একমাসের মধ্যে ভোটাভুটি করে নতুন প্রধান নির্বাচনের নির্দেশ দেয়। সেই অনুযায়ী বুধবার প্রধান নির্বাচন হতে চলেছে।
বোর্ড দখল করা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি দু’পক্ষই আত্মবিশ্বাস জাহির করলেও শাসকদল কিছুটা ব্যাকফুটে রয়েছে বলে সূত্রের খবর। তৃণমূলের দাবি, তাদের কাছে এখনও সাতজনের সমর্থন রয়েছে। বিজেপির কাছে তার দ্বিগুণের বেশি সদস্য থাকলেও বোর্ড গঠনে অনেক সদস্যই গোপনে তাদের সমর্থন করবে। বিজেপি অবশ্য তৃণমূল নেতাদের ওই দাবিকে দিবাস্বপ্ন বলে কটাক্ষ করেছে।
তৃণমূলের জলঙ্গি উত্তর জোন সভাপতি আমজাদ আলি খান বলেন, বোর্ড আমাদেরই দখলে থাকবে। এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে সাতজন সদস্যের সমর্থন আছে। কিন্তু আগেরবার যেমন অন্য অনেক পঞ্চায়েত সদস্য ভিতরে গিয়ে গোপনে আমাদের সমর্থন করেছিলেন, এবারও ঠিক তাই হবে। বিজেপির যুব মোর্চার জলঙ্গি ২নম্বর মণ্ডল সভাপতি সঞ্জয় রানা বলেন, আগেরবার প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশ করে তৃণমূল বেআইনিভাবে বোর্ড দখল করেছিল। কিন্তু এবার তা সম্ভব নয়। আমাদের কাছে তৃণমূলের দ্বিগুণ সদস্য রয়েছে। আরও বেশ কয়েকজন সদস্য আমাদের সমর্থন করবেন। আমরা ওই বোর্ডের দখল নেওয়ার বিষয়ে ১০০শতাংশ নিশ্চিত।
গতবারের থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার প্রধান নির্বাচন ঘিরে পঞ্চায়েত অফিস নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হবে। অফিসের আশপাশে প্রচুর পুলিস ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পরিচয়পত্র দেখে পঞ্চায়েত সদস্যদের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে। বেআইনিভাবে জমায়েত হলে পুলিস কড়া ব্যবস্থা নেবে।