ফরাক্কা ব্যারাজের জন্য টাকা দেয় না কেন্দ্র, ভাঙন নিয়ে সরব মমতা
বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সূতি: ভাঙন রোধে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা কেন্দ্রের তরফে আটকে রাখার প্রতিবাদে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও ভাঙন রোধে এই জেলায় প্রায় ৪০০কোটি টাকার কাজ হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। মঙ্গলবার সূতির ছাবঘাটির প্রশাসনিক সভায় মমতা বলেন, আপনারা জানেন ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ, ভগবানগোলা ও লালগোলা ভাঙন-কবলিত এলাকা। এখানকার বহু জমি নদীর তলায় চলে গিয়েছে। কেন্দ্রের কাছে আমি বারবার দাবি জানিয়েছি। ওরা কোনও কাজ করছে না। ফরাক্কা ব্যারেজের জন্য আমরা টাকা পাই। সেই টাকাও দিচ্ছে না কেন্দ্র।
এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদে এসে ফরাক্কা ব্যারেজের সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বারবার বলা হলেও ভাঙন রোধে কেন্দ্র উদ্যোগী হচ্ছে না। উল্টে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকে রাখছে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার কীভাবে বন্যা ও ভাঙন রোধে কাজ করছে, মমতা তা তুলে ধরেন।
ছাবঘাটির প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন, বঞ্চনা করা হলেও বাংলা পিছিয়ে পড়বে না। রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিলের টাকায় একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ৪৩৯কোটি টাকায় কান্দির মাস্টারপ্ল্যানের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। আগামী দিনে ফরাক্কা ও সামশেরগঞ্জে ভাঙন রোধে আরও ২০০কোটি টাকার কাজ হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর করতালিতে ফেটে পড়ে সভাস্থল।
ধুলিয়ানের বাসিন্দা নীলাদ্রি ঘোষ বলেন, বছর পর বছর ধরে ভাঙনের আতঙ্ক নিয়েই আমরা বসবাস করি। বর্ষার পর থেকে ভাঙন সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করে। কেন্দ্রীয় সরকার এনিয়ে কোনও কাজই করছে না, সেটা ভালোভাবেই জানি। ভাঙন এমনই সমস্যা যে, কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে এগিয়ে না এলে স্থায়ী সমাধান হবে না। একদিন ধুলিয়ান শহরের বেশিরভাগ জায়গা মানচিত্র থেকে মুছে যাবে।
সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা ফিরোজ আলি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগেও সামশেরগঞ্জ এসেছিলেন। আমরা ভাঙনে ঘরবাড়ি, জমি সব হারিয়েছিলাম। উনি এসে আমাদের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেন। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দিলেও রাজ্য সরকার ভাঙন রোধে কিছুটা হলেও কাজ করছে, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। তবে আমরা এসমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। প্রতিবছর বিঘার পর বিঘা জমি নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রের অবিলম্বে রাজ্যের সমস্ত প্রাপ্য টাকা ছেড়ে দেওয়া উচিত। ভাঙন রোধে দুই সরকার একসঙ্গে মিলে কাজ করুক। - নিজস্ব চিত্র