সামশেরগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী, ২৮৬টি পরিবারকে ক্ষতিপূরণের চেক
বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
অভিষেক পাল, সামশেরগঞ্জ: সামশেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানের হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৮৩টি পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে তুলে দিলেন ঘরের প্রতীকী চাবি। সেইসঙ্গে প্রত্যেক পরিবারের হাতে এক লক্ষ ২০হাজার টাকার চেকও তুলে দেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সাহায্য করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার সামশেরগঞ্জের বিডিও অফিস প্রাঙ্গণে আলাদা করে প্যান্ডেল বাঁধা হয়েছিল। সেখানেই বেলা ১১টা থেকে অপেক্ষা করেছিলেন সামশেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা। মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার বহরমপুর সার্কিট হাউস থেকে হেলিকপ্টারে চেপে পার্শ্ববর্তী সামশেরগঞ্জের কিষান মান্ডির হেলিপ্যাডে নামেন। মুখ্যমন্ত্রীর আসার খবর পেয়ে রাস্তার দু’ধারে বহু সাধারণ মানুষ তাঁকে দেখার জন্য রোদ উপেক্ষা করে অপেক্ষা করছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হেলিপ্যাড থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার হেঁটে বিডিও অফিসে আসেন। তারপরই ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেন। হিংসার ঘটনার পর থেকেই ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থেকে যাবতীয় ত্রাণসামগ্রী তুলে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। সেই কাজেরও প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিন বিডিও অফিসে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমার, জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ও জঙ্গিপুরের পুলিস সুপার অমিতকুমার সাউ। মুখ্যমন্ত্রী সকলের সঙ্গে কথা বলে চেক বিতরণ করা শুরু করেন। তারপর জঙ্গিপুরে তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমানের উপর দায়িত্ব দিয়ে তিনি সূতিতে প্রশাসনিক সভার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে বক্তব্য রাখতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২৮৩টি পরিবারের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে তাঁদের সাহায্য করা হয়েছে। এক লক্ষ ২০হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের সমস্যার কথা বলতে পেরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন সামশেরগঞ্জ এবং ধুলিয়ানের বাসিন্দারা। জিগড়ির বাসিন্দা যমুনা সাহা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললাম। ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা পেয়েছি। বাতাসা তৈরি করতাম। আমার নিজের দোকান ছিল। আমার দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন হিজলতলার বাসিন্দা মিঠুন নাদাব। তিনি বলেন, দেড় ভরি সোনা লুট হয়েছে। দুটো বড় ছাগল তুলে নিয়ে চলে গিয়েছে। বাড়িতে ৫০হাজার টাকা ছিল, সেসব লুট হয়েছে। আমার অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এদিন দিদি এসে ১ লক্ষ ২০হাজার টাকা দিয়েছেন। আমি চেয়ারের ব্যবসা করি। চেয়ার তৈরি করে বিভিন্ন গ্রামে বিক্রি করতাম। আমার বাড়ির বিভিন্ন জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাকে প্রশাসন থেকে সরকারি বাড়ি দেবে বলেছে। হিজলতলার বাসিন্দা মর্জিনা খাতুন বলেন, ঘটনার দিন কী হয়েছে সেটা বলেছি। দিদি সব শুনলেন। আমাদের আশ্বস্ত করছেন। আর্থিক সাহায্যের টাকা পেয়েছি। - নিজস্ব চিত্র