• প্রভু জগন্নাথ দর্শনে বিদেশি ভক্তের ঢল, নতুন অতিথিদের নিয়ে ব্যস্ত দীঘা
    বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: বঙ্গোপসাগরের তীরে দীঘায় প্রভু জগন্নাথের ‘নব আলয়’ চাক্ষুষ করতে বিদেশ থেকেও প্রচুর ভক্ত আসছেন। তাঁরা নদীয়ার মায়াপুর হয়ে দীঘায় আসছেন। রাশিয়া, কাজাখস্তান, জার্মানি, ইংল্যান্ড প্রভৃতি দেশ থেকে আসছেন। গত ৩০এপ্রিল উদ্বোধনের দিন ৫০জন বিদেশি ইসকন ভক্ত দীঘা জগন্নাথ মন্দিরে এসেছিলেন। খোল, করতাল বাজিয়ে হরেকৃষ্ণ ধ্বনি তুলে মন্দির পরিক্রমা করেন। আবার মায়াপুর থেকে দলবেঁধে ইসকন ভক্তরাও দীঘায় আসছেন। স্বদেশি ও বিদেশি ভক্ত সমাগমে বিশ্বজুড়ে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের পরিচিতি ঘটছে। উদ্বোধনের পর থেকেই মন্দিরে ঢোকার জন্য শুধুমাত্র ৬নম্বর গেট খোলা ছিল। তাঁরা ৭নম্বর গেট দিয়ে বেরিয়ে আসতেন। ভিড়ের চাপে মন্দিরের সামনে মূল গেটও সাধারণ পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ২নম্বর গেট দিয়ে ভক্তদের ঢোকা এবং ৩নম্বর গেট দিয়ে বেরনোর ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। 

    জগন্নাথদেবের প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর থে঩কেই দীঘার মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ছে। সংবাদমাধ্যমে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দীঘার মন্দিরের অপরূপ দৃশ্য দেখার পর চাক্ষুষ করতে দলবেঁধে পুণ্যার্থীরা ভিড় করছেন। প্রভুকে দেখতে আসা পুণ্যার্থীদের হাত ধরে দীঘার হোটেলগুলি এখন ‘হাউসফুল’। নিউ দীঘার পাশাপাশি ওল্ড দীঘাতেও বেশিরভাগ রুম বুকড। কাঁথি, এগরা মহকুমা থেকেও অনেকে দলবেঁধে সকালে এসে সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। এরাজ্যের পাশাপাশি ওড়িশা, বিহার থেকেও অনেক পুণ্যার্থী আসছেন। মন্দিরের নজরকাড়া স্থাপত্য দেখে চোখ আটকে যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, স্বাধীনতার পর এমন ভাস্কর্য এরাজ্যে সম্ভবত এই প্রথম। মন্দিরের সুরক্ষার উপর ব্যাপকভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার একজন করে থাকছেন। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন থানা থেকে দু’জন করে ওসি জগন্নাথ মন্দিরে ডিউটি করছেন। পুরুলিয়ার ১১ব্যাটেলিয়ন থেকে ৫০জন পুলিসকর্মী এসেছেন। তাঁদেরও ডিউটিতে লাগানো হয়েছে। এর বাইরে দীঘা জগন্নাথ মন্দির ফাঁড়ির ২০জন পুলিস অফিসার ও কর্মী, প্রায় তিনশো সিভিক ভলান্টিয়ার সুরক্ষার কাজে নিযুক্ত। 

    মঙ্গলবার দীঘা জগন্নাথ মন্দির দর্শনে গিয়েছিলেন পাঁশকুড়ার নারান্দার বিশ্বজিৎ মাইতি ও তাঁর পরিবার। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, মন্দিরের সামনে ২ ও ৩নম্বর গেট খুলে দেওয়ায় পুণ্যার্থীদের সুবিধা হয়েছে। প্রচণ্ড গরম ও রোদের মধ্যে একটিমাত্র গেট দিয়ে মন্দিরে ঢোকার সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে। দীঘা ইসকন মন্দিরের মহারাজ গোপাল দাস বলেন, ইসকনের অনেক ভক্ত মায়াপুরে আসেন। তাঁদের অনেকে সেখানে থাকেন। সেইসব ভক্তরা জগন্নাথ মন্দির দর্শনে আসছেন। উদ্বোধনের সময় ৫০জন এসেছিলেন। দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, দীঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের ফলে ভক্ত সংখ্যা বেড়েছে। পর্যটক এবং ভক্ত সমাগমে হোটেলে বহু রুম বুক থাকছে। আমাদের কাছে এটা বড় প্রাপ্তি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)