• সিউড়িতে ৪০ শতাংশ বহুতলে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা‌ নেই, দাবি পুরসভার
    বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, সিউড়ি: সিউড়িতে একের পর এক বহুতল গজিয়ে উঠছে। গৃহস্থ বাড়ি ভেঙে সেখানে এই সমস্ত বহুতল তৈরি করছেন প্রোমোটাররা। সেখানে মধ্যবিত্ত মানুষ ফ্ল্যাট কিনছেন। এই বহুতল কতটা সরকারি নিয়ম মেনে তৈরি হয়েছে, তা দেখতে অভিযানে নেমে সিউড়ি পুরকর্তৃপক্ষের চক্ষু চড়কগাছ! দেখা গিয়েছে, শহরের ৪০শতাংশের বেশি বহুতলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। এখবরে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

    সম্প্রতি কলকাতা ও তার আশপাশে একের পর এক বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এর নেপথ্যে বহুতলের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও একের বেশি বেরনোর পথ না থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কলকাতায় অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। ফলে সিউড়ি শহরেও ৪০শতাংশের বেশি বহুতলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলির বাসিন্দাদের ঘুম উড়েছে।

    সিউড়িতে নতুন ও পুরনো মিলিয়ে ৪৪টির বেশি বহুতল রয়েছে। এর মধ্যে কিছু বহুতল নির্মীয়মাণ অবস্থায় রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্মীয়মাণ অবস্থাতেই ক্রেতারা আগাম ফ্ল্যাট বুকিং করেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই প্রোমোটাররা সরকারি নিয়ম মেনে বিল্ডিং তৈরির বিষয়ে ক্রেতাদের কোনও নিশ্চয়তা দিচ্ছেন না। 

    তাই সেই বিল্ডিংয়ের আবাসিকরা জানতেও পারছেন না, সেখানে সরকারি নিয়ম মেনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে কি না! পরবর্তীকালে অগ্নিকাণ্ড ঘটলে আবাসিকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সেকারণে তিনমাস আগে সিউড়ি পুরসভা একটি সমীক্ষা শুরু করেছিল। তাতে দেখা হয়, শহরের বিভিন্ন বহুতল আদৌ কতটা সরকারি নিয়ম মেনে তৈরি হয়েছে। 

    সেই সমীক্ষায় পুরকর্তৃপক্ষ জানতে পারে, শহরের ৪০শতাংশ বহুতলে সঠিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। কোথাও কোথাও পার্কিংয়ের সমস্যা রয়েছে। বিশেষত অনেক বহুতল শপিংমলে নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নেই। কিছু ক্ষেত্রে যত তলা বিল্ডিং তৈরির অনুমোদন মিলেছে, তার চেয়েও উঁচু করা হয়েছে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা নিয়ে পুরকর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সমস্ত বহুতল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা করতে বলা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সদর মহকুমা শাসক, পুরসভার চেয়ারম্যান ও আধিকারিকরা বহুতলে যৌথ অভিযান শুরু করবেন।

    তবে সাধারণ মানুষ এই অব্যবস্থার জন্য পুরসভার দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে। কারণ এই বহুতল তৈরির অনুমোদন পুরসভাই দেয়। অভিযোগ, পুরসভার কাউন্সিলার এবং শাসকদলের স্নেহধন্য হলেই বহুতলের অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হয়। 

    পরে সরকারি নিয়মের টানাপোড়েনে বহুতলের আবাসিকদের সমস্যায় পড়তে হয়। পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা অভিযান শুরু করেছিলাম। তাতে দেখেছি, শহরের ৪০শতাংশ বহুতলে কোনও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। আমরা ওদের চিঠি দিয়ে কাগজ জমা করতে বলেছি। ওরা কাগজ জমা না করলে ফের অভিযান শুরু হবে। মহকুমা শাসক ও পুরসভার যৌথ অভিযান হবে।  প্রতীকী চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)