• জোকা-মাঝেরহাট মেট্রো ধর্মতলা পর্যন্ত যাবে কবে? প্রশ্ন তুলছেন নিত্যযাত্রীরা
    বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘দিনে ১৮টির পরিবর্তে এবার থেকে ৪০টি রেক চলবে জোকা-মাঝেরহাট মেট্রো রুটে। একধাক্কায় রেকের সংখ্যা বেড়েছে ২২টি। ফলে আর ৫০ মিনিট নয়, পরের মেট্রো মিলবে ২২ মিনিট পরেই। ‘এবার অন্তত ঠাকুরপুকুর থেকে বেহালায় অফিস যাওয়ার জন্য মেট্রোয় ওঠার কথা ভাবা যেতে পারে। না হলে তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে, আমাদের এখানেও মেট্রো চলে। নাহলে মাথার উপরে মেট্রোর উড়ালপুল আর স্টেশনগুলি শুধু বৃষ্টি পড়লেই আম জনতার কাজে দেয়। তলায় দাঁড়ালে বৃষ্টির হাত থেকে মুক্তি।’— চোখেমুখে স্বস্তির ছাপ থাকলেও কটাক্ষের সুরে প্রতিক্রিয়া জানালেন ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা প্রণব কয়াল। 

    জোকা-মাঝেরহাট রুটের সময়সূচি বদলেছে সোমবার থেকে। ৫০ মিনিটের পরিবর্তে এবার ২২ মিনিট অন্তর মেট্রো পাবেন সাধারণ মানুষ। এই নিয়ে বেহালা, ঠাকুরপুকুর অঞ্চলের অফিসযাত্রী, স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা কী বলছেন? তার খোঁজে নেমে পাওয়া গেল মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বেশিরভাগ মানুষই মেট্রো ব্যবহার করেন না। কারণ পরিষেবা শুধুমাত্র বেহালা-নির্ভর। সেকারণে সময়সূচি নিয়েও নিত্যযাত্রীরা খুব একটা ওয়াকিবহাল নন। তবে সংবাদমাধ্যমে নতুন সময়সূচি জেনে কিছুটা হলেও মেট্রোমুখী যাত্রীরা। তবে সেই সংখ্যাটাও নগণ্য। সখেরবাজারের বাসিন্দা অনুরাগ দাসের কথায়, ‘এবার থেকে পরবর্তী মেট্রোর জন্য ২৭ মিনিট কম অপেক্ষা করতে হবে। খবরটা শুনলাম। কিন্তু, তাতে আদতে লাভ কাদের? যাদের যাত্রাপথ শুধুমাত্র জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত সীমিত। কিন্তু, সেই যাত্রী সংখ্যা তো হাতেগোনা। অফিসটাইমে বেশিরভাগ যাত্রীই ধর্মতলা, সল্টলেকে যান। সেক্ষেত্রে মেট্রো পরিষেবা তাঁদের কোনও কাজেই লাগবে না।’

    যদিও অনুরাগের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন জোকা ডায়মন্ড পার্কের চাকরিজীবী চিরঞ্জীব মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘সল্টলেকে অফিস হলে এই মেট্রোয় চড়ে যে লাভ হবে না, একথা সম্পূর্ণ ঠিক নয়। আমার অফিস সেক্টর ফাইভে। আমি মেট্রো ধরে মাঝেরহাটে যাই। সেখান থেকে ট্রেনে শিয়ালদহ। তারপর আবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চেপে অফিস। ব্যস! আগে সময় অনেক বেশি লাগত। মেট্রো ধরতে না পারলে অটো কিংবা বাসে করে স্টেশন যেতে হতো। এখন তা আর করতে হবে না। ২২ মিনিট অন্তর জোকা থেকেই মেট্রো ছাড়ছে।’

    সব মিলিয়ে পরিষেবা বৃদ্ধিতে কিছুটা খুশি হলেও মেট্রো কর্তৃপক্ষ এখনও সন্তুষ্ট করতে পারছে না বেহালা, ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দাদের। যাত্রীদের একটাই দাবি, এই মেট্রোর ধর্মতলা সংযোগ কবে হবে? অন্যথায় মেট্রোর থেকে মুখ ফিরিয়েই রাখবেন শহরের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের বাসিন্দারা। উল্লেখ্য, মোমিনপুর পর্যন্ত মেট্রোর উড়ালপুল সম্প্রসারণের কাজ প্রায় শেষ। ময়ূরভঞ্জ, একবালপুর এলাকায় পুরোদমে কাজ চলছে। কিন্তু, ‘ধর্মতলা পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা আমাদের জেনারেশন দেখে যেতে পারবে বলে মনে হয় না’, আফশোস বেহালার বাসিন্দা মাঝবয়সি অঞ্জন বসুর।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)