নিরাপত্তায় ব্যর্থ পুলিস, বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হুঁশিয়ারি ক্ষুব্ধ হাইকোর্টের
বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কলকাতার একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে পারেনি পুরসভা। দলবল নিয়ে তিন-তিনবার সেই নির্মাণ ভাঙতে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে পুরকর্মীদের। বাসিন্দাদের প্রতিরোধের সামনে পুলিস ছিল কার্যত অসহায় দর্শক। এই অবস্থায় পাঁচতলা ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর হুঁশিয়ারি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এটাই শেষ সুযোগ। কলকাতা পুলিস না পারলে এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ওই বিল্ডিং খালি করানোর নির্দেশ দেবে আদালত।
২০২৩ সালে কলকাতা পুরসভার ৩ নম্বর বরোর অন্তর্গত ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বেআইনি নির্মাণকে কেন্দ্র করে মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। নারকেলডাঙা থানা এলাকার ছামরু সিং লেনের ১৪/এইচ/১ নম্বর ঠিকানায় অবস্থিত ওই নির্মাণটি পুরোপুরি বেআইনি বলে অভিযোগ ছিল মামলাকারীর। মামলার শুনানিতে পুরসভাও স্বীকার করে নেয় যে নির্মাণটি পুরোপুরি অবৈধ। তারা আরও জানায়, ২০১৭ সালেই নির্মাণকারীকে ৪০১ ধারায় নোটিস জারি কার হয়েছিল। সেই সঙ্গে অভিযোগের ভিত্তিতে নারকেলডাঙা থানায় একটি এফআইআর করা হয়েছে বলে জানায় পুরসভা। তাদের বক্তব্য শোনার পর ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর বিচারপতি সিনহা নির্দেশে জানান, নারকেলডাঙা থানাকে ওই বেআইনি নির্মাণ খালি করতে হবে। তারপর নির্মাণটি পুরোপুরি ভেঙে ফেলতে হবে পুরসভাকে।
তারপর বহুদিন কেটে গেলেও সেই নির্দেশ কার্যকর করতে পারেনি পুরসভা। তাদের দাবি ছিল, পুলিস ওই বিল্ডিং খলি করতে পারছে না। ভাঙার জন্য কর্মী নিয়ে গিয়েও বাসিন্দাদের প্রতিরোধের মুখে পুরসভাকে ফিরে আসতে হয়েছে। এদিকে, নির্দেশ কার্যকর না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে পুরসভার তরফে জানানো হয়, গত ৭, ৮ এবং ৯ এপ্রিল ওই নির্মাণ ভাঙার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পুরসভাকে ফিরে আসতে হয়েছে। পুলিস কোনওভাবেই ওই নির্মাণ খালি করতে পারেনি।
এই বক্তব্য শোনার পরই বিচারপতি সিনহা নির্দেশে জানান, কলকাতা পুলিস না পারলে এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ওই নির্মাণ খালি করাবে আদালত। কলকাতা পুলিস কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করে ডিসি (ইএসডি) ওই নির্মাণ খালি করতে একটি বিশেষ দল গঠন করবেন। পর্যাপ্ত পুলিস বাহিনী মোতায়েন করে ১৬ জুনের মধ্যে ওই নির্মাণ খালি করতে হবে। তারপর সেটি ভাঙার কাজ শুরু করবে পুরসভা। ১৬ তারিখ মামলার পরবর্তী শুনানি। পুরসভা ও পুলিসকে ছবি সহ ওই দিন রিপোর্ট পেশেরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।