‘ই-কমার্স সংস্থায় লগ্নিতে কমিশন দ্বিগুণ!’ ফাঁদে পড়ে ২ লক্ষ টাকা খোয়ালেন তরুণী
বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কিছুদিন আগে টেলিগ্রাম অ্যাপে এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয় কসবার তরুণীর। সেই পরিচিতির সূত্রে ওই তরুণী বাড়িতে বসেই ‘চাকরি’র অফার পান! তাঁকে বলা হয়, একটি অ্যাপনির্ভর সামগ্রী বণ্টন সংস্থায় (ই-কমার্স) ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’র ক্ষেত্রে ‘অনুমোদনকারী’ হিসেবে কাজ করতে হবে। অর্থাৎ, ওই সংস্থা থেকে কেউ কিছু নগদ টাকা দিয়ে কিনতে চাইলে ‘অনুমোদনকারী’কেই অগ্রিম সেই টাকা দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। এভাবে তিনি নির্দিষ্ট ওই কেনাকাটির প্রক্রিয়াটি ‘অনুমোদন’ করবেন। এর বদলে কী পাবেন তরুণী? তাঁকে জানানো হয়, যে টাকা দিয়ে তিনি পণ্য কিনবেন বা অনুমোদন দেবেন, সেই টাকা আসলে তাঁরই ‘লগ্নি’ হিসেবে গণ্য হবে। প্রতিটি লেনদেনে ‘লগ্নি’র দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেওয়া হবে ‘লগ্নিকারী’কে। এই বাড়তি টাকাই তাঁর কমিশন। তরুণী বুঝতে পারেননি যে সবটাই আসলে প্রতারণার ফাঁদ! তিনি যথারীতি সেই ফাঁদে পা দেন। তারপর কয়েক দফায় ‘লগ্নি’ করে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খুইয়ে মঙ্গলবার তিনি কসবা থানা ও সাউথ সাবার্বান ডিভিশনের সাইবার সেলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। লালবাজার জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিস সূত্রে খবর, এক্ষেত্রে প্রতারণার ধরনটি পুরনো হলেও ফাঁদে ফেলার জন্য যে গল্প সাজানো হয়েছে, তা বেশ অভিনব। প্রতারকদের এই ফাঁদে পা দিয়ে কসবার তরুণী প্রথমে ২০০ টাকার একটি সামগ্রী বিক্রয়ের জন্য ‘অনুমোদন’ দেন। পরিবর্তে তিনি পান ৫০০ টাকা। পরবর্তীতে ৬০০ টাকার সামগ্রীর ক্ষেত্রে কমিশন পান হাজার টাকা। কথা মতো পরপর মোটা কমিশন মেলায় তরুণীর বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়। তখনই শুরু হয় প্রতারণা। টেলিগ্রাম গ্রুপে পরিচিত সেই ব্যক্তি জানায়, মাসের শেষে এক লপ্তে ঢুকবে কমিশন। সেই মতো গোটা মাস ধরে কয়েক দফায় প্রায় ২ লক্ষ টাকা ‘লগ্নি’ করেন তরুণী। প্রতারকরা জানায়, সাড়ে চার লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অর্থাৎ, কমিশন প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। মাস শেষ হতেই বেঁকে বসে প্রতারক। অভিযোগে তরুণী জানিয়েছেন, আরও ৫০ হাজার টাকা না দিলে কমিশন ফেরতের প্রক্রিয়া শেষ করা যাচ্ছে না। তখন তরুণী নিশ্চিত হন, সাইবার প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন তিনি। আর দেরি না করে পুলিসের দ্বারস্থ হন। যে অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে, সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখার কাজ তদন্তকারীরা শুরু করেছেন বলে খবর।