আমডাঙায় ১২ নং জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে লাগাতার বাধা, ধৃত ৩
বর্তমান | ০৭ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: জনস্বার্থে ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এক্ষেত্রে যে কোনও ‘বাধা’ পুলিসকে কড়া হাতে মোকাবিলার আদেশ দেয় আদালত। তারপরেও আমডাঙায় জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ করতে গিয়ে দফায় দফায় বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। স্থানীয় ভূমিরক্ষা কমিটির আপত্তিতে একাধিকবার কাজ বন্ধও করে দিতে হয়। পুলিস ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চূড়ান্ত হেনস্তা করা হয় বলেও অভিযোগ। সেই অভিযোগে এবার তিন ‘মাথা’-কে গ্রেপ্তার করল আমডাঙা থানার পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, আব্দুস সামাদ, মহঃ সৈয়দ আহমেদ এবং মনজুরুল আমিন নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ইসরাফিল মোল্লাকে। তিনি এখন জেল হেফাজতে আছেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিস।
কলকাতার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হল ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। বারাসত থেকে আমডাঙার সন্তোষপুর পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণ নির্বিঘ্নে হলেও এরপর থেকে কাজ থমকে ছিল। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আমডাঙার সন্তোষপুর থেকে রাজবেড়িয়া পর্যন্ত রয়েছে ২১টি মৌজা। সড়কপথে এই দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। এই অংশে সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমিদাতার সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। এর মধ্যে ফাঁকা জমি, বাড়ি যেমন রয়েছে, তেমনই আছে দোকানঘর ও কয়েকটি কারখানা। বর্তমান রাস্তার দু’দিকেই অধিগ্রহণের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু এখনও সেই জমি হাতে পায়নি প্রশাসন। যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবিতে আগেও একাধিকবার আন্দোলন করেছেন জমিদাতারা। ওই অবস্থায় জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে দীর্ঘদিন ধরে থমকে থাকা কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেইমতো ১ মার্চ থেকে শুরু হয় কাজ। ক’দিন কাজ ঠিকঠাক এগচ্ছিল। তারপর কখনও আদহাটা, কখনও আমডাঙা, কখনও মরিচাতে কাজে বাধা পড়তে শুরু করে। তুমুল বিক্ষোভ হয়। মূলত, ২০১৩ সালের জমি অধিগ্রহণ আইন মোতাবেক ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষজন। তবে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ ফের শুরু হওয়ায় অনেক মানুষ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু অধিকার রক্ষা কমিটির লোকজন বিক্ষিপ্তভাবে কাজে বাধা দেওয়ায় সম্প্রসারণের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছিল। অভিযোগ, এই বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন ধৃত মহঃ সৈয়দ আহমেদ। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, এই জমি রক্ষা কমিটির পিছনে রাজনৈতিক উস্কানি রয়েছে। প্রশাসনের উচিত, কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা। নিজস্ব চিত্র