এই সময়, সুতি: জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে শহিদ হয়েছিলেন নদিয়ার তেহট্টের ঝন্টু আলি শেখ। ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন রাজ্য প্রশাসন সব রকম ভাবে ওই পরিবারের পাশে থাকবে।
মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের সুতিতে প্রশাসনিক সভামঞ্চে ঝন্টুর স্ত্রী শেহনাজ় পারভিনের হাতে ১০ লক্ষ টাকার চেক এবং হোমগার্ডের চাকরিতে নিয়োগপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশ্বাস দেন, এর পরেও যে কোনও প্রয়োজনে ওই পরিবারের পাশে থাকবেন তিনি। গত ১২ এপ্রিল সুতি থানার সাজুর মোড়ে অশান্তির সময়ে গুলিতে নিহত হন স্থানীয় ২৪ বছরের এক তরুণ।
এ দিন সুতির সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ওই তরুণের স্ত্রীর হাতেও ১০ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারকে নির্দেশ দেন, ওই পরিবারের কাউকে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলায় কোনও চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।
প্রসঙ্গত, পহেলগামে জঙ্গি হানার পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে কাশ্মীরে শহীদ হয়েছিলেন ভারতীয় সেনার জওয়ান ঝন্টু। এ দিনের সভায় হাজির করানোর জন্য সোমবার দুপুরে নদিয়ার তেহট্ট থেকে মুর্শিদাবাদে নিয়ে আসা হয়েছিল তাঁর পরিবারের সদস্যদের।
এ দিন কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলায় মহিলা হোমগার্ড পদে চাকরির নিয়োগপত্র শেহনাজ়ের তুলে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এর পরেও যদি কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হয়, সব সময়ের জন্য আমি তাঁদের পাশে আছি।’ মমতার কথা শুনে মঞ্চে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শেহনাজ়। মুখ্যমন্ত্রীও বড় দিদির মতো তাঁর চোখের জল মুছিয়ে দেন।
সভার পরে শেহনাজ় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আমি সাহস পেয়েছি। প্রথম দিন থেকে তিনি আমার পাশে ছিলেন। আমার সন্তানদের পাশে ছিলেন তিনি। বড় দিদির মতো আমাকে আগলে রেখেছিলেন।’
ঝন্টু আলি শেখ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সুবেদার পদে কর্মরত ছিলেন কাশ্মীরে। পহেলগামে জঙ্গি হানার পরে তল্লাশির সময় জঙ্গিদের গুলিকেপ্রাণ হারান ঝন্টু। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঝন্টু আলি শেখ দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। আমি তাঁর পরিবার, স্ত্রী ও সন্তান সন্ততিদের স্যালুট জানাই। ওঁরা আমাদের গর্ব। আমরা যেন এই পরিবারগুলিকে মনে রাখি এবং পাশে থাকি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাশ্মীরে ওঁর স্বামী যখন কর্মরত, তখন ওঁরা হায়দরাবাদে থাকতেন। শেহনাজ় এখন কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলায় হোমগার্ডের চাকরি করবে। আর নাবালক দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য আমাদের তরফ থেকে শেহনাজে়র হাতে ১০ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হলো।’
ঝন্টুর দাদা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সুবেদার রফিকুল শেখ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আগে বলেছিলেন, বাবা-মায়ের জন্য পেনশনের ব্যবস্থা করবেন। এ দিন সে ব্যাপারে কোনও কিছু বলেননি।’