সরকার থেকে এপ্রিলের বেতন এল না কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে
আনন্দবাজার | ০৭ মে ২০২৫
যাদবপুর, কলকাতা, রবীন্দ্রভারতী-সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এপ্রিল মাসের বেতন ও পেনশনের টাকা দেয়নি রাজ্য সরকার। এমনই অভিযোগ উঠেছে। সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিজেদের তহবিল থেকে বেতন এবং পেনশন দিয়েছে।
বিকাশ ভবনের এক আধিকারিক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কত জন শিক্ষক, আধিকারিক, শিক্ষাকর্মী আছেন, তাঁদের নাম-সহ তালিকা প্রতি বারই অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে চাওয়া হয়। তাঁর দাবি, রবীন্দ্রভারতী সেই তথ্য এখনও জানায়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রেও জানতে চাওয়া সব তথ্য তারা পাঠায়নি। বেতনের রিকুইজ়িশনের সঙ্গে ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট-সহ সব তথ্য না দিলে বেতন এবং পেনশনের জন্য অর্থ দেওয়া সম্ভব নয়। ওই আধিকারিকের দাবি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যথাযথ ভাবে রিকুইজ়িশনও পাঠায়নি।
যদিও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, এর আগেও দু’মাস বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন ও পেনশনের টাকা আটকে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। পরে প্রতিবাদ জানালে তা দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে একসঙ্গে সব জানতে চাওয়া হয় না। তবুও যাদবপুরের কাছে যা যা জানতে চাওয়া হয়েছে, সব
জানানো হয়েছে। তার পরেও বেতন এবং পেনশনের টাকা আসেনি। পার্থপ্রতিম বলেন, ‘‘এ সবই ইচ্ছাকৃত। ধীরে ধীরে এইচআরএমএস ব্যবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি ছাড়া কিছু নয়।’’ তিনি জানান, যাদবপুরে এপ্রিল মাসের বেতন ও পেনশন দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্পাস ফান্ড থেকে। কিন্তু এই তহবিলও গত কয়েক বছরে তলানিতে এসে ঠেকেছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (কুটা) সভাপতি সনাতন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুনেছি, সরকার থেকে বেতন, পেনশন আসেনি।’’ তিনি জানান, এপ্রিলের বেতন, পেনশন দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের দাবি, যে সব বিষয় বিকাশ ভবন জানতে চেয়েছে, সেগুলি আগেই জানানো হয়েছে। এর পরে আবারও জানতে চাওয়া অর্থহীন। তাঁরা জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এপ্রিলের বেতন দেওয়া হয়েছে দূরশিক্ষার তহবিল থেকে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্প্রতি হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এইচআরএমএস) দ্রুত কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ শিক্ষা দফতর। এই ব্যবস্থায় সব শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীর বেতন, পেনশন, পিএফ-সহ নানা আর্থিক কাজের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ভাবে থাকবে বিকাশ ভবনের হাতে। তবে আগেই বিষয়টির বিরোধিতা করেছেন যাদবপুর, কলকাতা, রবীন্দ্রভারতী, নেতাজি মুক্ত-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। পার্থপ্রতিম জানান, এইচআরএমএস পদ্ধতি চালুর বিরুদ্ধে তাঁরা ১৫ মে থেকে আন্দোলনে নামতে চলেছেন।