বাবা সব্জি বিক্রেতা, ছেলের বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন, আর্থিক অনটনে পড়াশোনা কী ভাবে? চিন্তায় উচ্চ মাধ্যমিকে দ্বিতীয় তুষারের বাবা
আনন্দবাজার | ০৭ মে ২০২৫
বাবার সব্জির দোকান। ছেলের স্বপ্ন বিজ্ঞানী হওয়ার। উচ্চ মাধ্যমিকে দ্বিতীয় স্থান পাওয়ার পর ছেলের স্বপ্নকে কী ভাবে বাস্তবায়িত করবেন সেই চিন্তাই করছেন তুষার দেবনাথের বাবা তপন দেবনাথ।
তুষার চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম দশের মেধাতালিকার মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৬। শতকরা হার ৯৯.২। তুষার বলেন, ‘‘চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু এত ভাল ফল হবে আশা করিনি। বিজ্ঞানী হতে চাই। নিট, জেইই মেনস দিয়েছি। যেখানে সুযোগ পাব পড়ার ইচ্ছে রয়েছে’’। যদিও তুষার বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স-এ পড়তে চান।
ছেলের স্বপ্ন পূরণ করবেন কী ভাবে?
এমন প্রশ্ন শুনতেই বাবার গলার আওয়াজ কিছুটা থমকে গেল। ছেলে এত ভাল ফল করেছেন কিন্তু এর পরে কী ভাবে পড়াবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তিনি বলেন, ‘‘ছেলে তো বিজ্ঞানী হতে চায়, কিন্তু কী ভাবে পড়াব! স্কুল যদি সাহায্য করে দেখি’’। উত্তর শুনতেই বোঝা গেল আর্থিক অনটন ভাল ফলাফলের পরেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে স্বপ্ন পূরণে।
তুষার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েও বেশ ওয়াকিবহল। পহলেগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং তার পর ভারতের প্রত্যাঘাত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভারতের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন ছিল’’।
বক্সিরহাট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন তুষার। বাড়ি কোচবিহারে অসম সীমানার কাছে। বাবা-মা ভাইকে নিয়েই দিন কাটে। মা অঞ্জনা দেবনাথ গৃহবধু। ভাই তরুণ দেবনাথ সদ্য মাধ্যমিক দিয়েছে। তুষার খেলাধুলা করতে ভালবাসেন। উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার সময়ও ক্রিকেট খেলা বাদ রাখেননি তুষার। পরিবারের মধ্যে ছেলের এমন ফলাফলে খুশির হাওয়া এলেও এর পর কী ভাবে উচ্চ শিক্ষা মিলবে, তা নিয়ে চিন্তায় সকলে।