• ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ চোখ ভিজল শহিদ ঝন্টু শেখের স্ত্রীর, পুত্রের মুখে জয়ের হাসি, পরিবার বলল, ‘এ জয় ছোট ছেলেরই’
    আনন্দবাজার | ০৭ মে ২০২৫
  • সকাল থেকে টিভির সামনে ঠায় বসে তাঁরা। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ভারতীয় সেনা। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সেই খবরে চোখ রাখতে রাখতেই অশ্রুসজল শহিদ ঝন্টু শেখের স্ত্রী। টিভির পর্দায় যত বার বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখলেন, তত বারই ওড়নার খুঁট দিয়ে চোখ মুছলেন শাহনাজ পারভিন। অস্ফুটে বললেন, ‘‘অবশেষে প্রত্যাঘাত হল।’’ বাবার কফিন কাঁধে নিয়ে কবরে পৌঁছে দেওয়া ঝন্টুর বারো বছরের পুত্রের চোখেমুখে জয়ের হাসি। আর জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার খবর শুনে বৃদ্ধ বাবা সবুর শেখের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ বার কবরে শান্তি পাবে ছেলে।’’

    নদিয়া জেলার তেহট্টের পাথরঘাটা অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন ৬ প্যারা এসএফ-এ কর্মরত ঝন্টু। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার পরেই উধমপুরের জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে নিহত হন তিনি। শহিদের দাদা এবং বৌদিও ভারতীয় সেনায় কর্মরত। ঝন্টুর দাদা ভারতীয় সেনার সুবেদার রফিকুল শেখ জানান, ভারতীয় সেনা ২৬ জনের খুনের প্রতিশোধ নেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভাই তারই অংশ ছিল। এই জয় ভাইয়ের।’’

    রফিকুল জানান, সকাল থেকেই খবর রাখছেন ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় সেনাবাহিনীকে স্যালুট জানাই। দেশের মানুষের আবেগ ও মনের কষ্টকে মর্যাদা দেওয়ার জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পাকিস্তানে বেড়ে ওঠা সন্ত্রাসবাদকে ধ্বংস করার জন্য সেনাবাহিনী সব সময় আত্মবলিদানের জন্য প্রস্তুত। আমার ভাই ২৬ জন নিরীহ মানুষের হত্যার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে শহিদ হয়েছে। আজ তো ভাইয়ের জয়ের দিন।’’

    জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার খবরে ঝন্টুর স্ত্রী শাহনাজ বলেন, ‘‘আমরা আজ আনন্দে কাঁদছি। ভারত সরকার ও আমার স্বামীর সহকর্মীরা তার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়েছেন। যে ভাবে অভিযানের নামকরণ করা হয়েছে, তাতে আমাদের চোখের জল থামছে না। আমাদের এই আনন্দের কান্না থামবে না।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)