উচ্চ মাধ্যমিকেও উত্তরের জয়, দশম মানিকচকের মৌমিতা, তপনের কৌরব
বর্তমান | ০৮ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, মানিকচক, তপন: মাধ্যমিকের পর হাইমাদ্রাসার মেধা তালিকায় একাধিক পড়ুয়া নাম তুলে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় ঠাঁই পেল মালদহের মাত্র একজন। ৪৮৮ নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে রাজ্যের মধ্যে দশম হয়েছেন আড়াইডাঙ্গা ডিবিএম অ্যাকাডেমির ছাত্রী মৌমিতা মণ্ডল।
এদিকে রাজ্যে যুগ্ম দশম হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের বালাপুর হাইস্কুলের ছাত্র কৌরব বর্মন। তিনি ৪৮৮ নম্বর পেয়েছেন।
মানিকচক ব্লকের চৌকি মিরাদপুর অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রাম নতুনটোলার বাসিন্দা মৌমিতা ইংরেজি নিয়ে উচ্চশিক্ষা শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর লক্ষ্য ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়ে সিভিল সার্ভিসে জয়েন করা। সপ্তাহ খানেক আগেই বেরিয়েছে মাধ্যমিকের ফলাফল। রাজ্যের মধ্যে এককভাবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করা থেকে শুরু করে মোট সাতজন ছাত্রীছাত্রী মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছিল। বুধবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর মেধা তালিকায় মালদহের একজনের নাম থাকায় হতাশ মালদহবাসী।
মেধা তালিকা প্রকাশ হতেই মেয়েকে জড়িয়ে ধরেন মা অনিতা মণ্ডল। মেয়ের সাফল্যে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি। অনিতা বলেন, মেয়ে ছোট থেকেই মেধাবী। ওকে কখনও পড়তে বসার কথা বলতে হয়নি। আমরা জানতাম উচ্চ মাধ্যমিকে খুব ভালো ফল করবে। তবে রাজ্যের মধ্যে যে দশম হবে ভাবিনি। মেয়ের সাফল্যে ভীষণ গর্ব হচ্ছে। ফল প্রকাশের পর থেকেই রতুয়া-২ নম্বর ব্লকের ডিবিএম অ্যাকাডেমির ছাত্রী মৌমিতা মৌমিতা বলেন, পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য মন দিয়ে খুঁটিয়ে পড়লেই হবে।
মৌমিতার বাবা সরকারি কর্মচারী। মাধ্যমিক পরীক্ষার পর মৌমিতা কলা বিভাগে ভর্তি হন। বাংলা, ইংরেজির সঙ্গে তাঁর বিষয় ছিল ভুগোল, দর্শন ও সংস্কৃত। বাংলা ও ইংরেজিতে মৌমিতা পেয়েছেন ৯৭ নম্বর। ভুগোলে ৯৬, দর্শন ও সংস্কৃতে ৯৯ নম্বর পেয়েছেন তিনি। পরবর্তী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মৌমিতা বলেন, টেক্সটবুক খুঁটিয়ে পড়াটাই আসল। সেটা নিয়ম মেনে করলে সাফল্য আসবেই।
এদিকে, মালঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব নিমপুরের কৌরবের বাবা কার্তিক বর্মন কৃষক। নিজের জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চালান তিনি। ছেলের লেখাপড়ার খরচ মেটাতে নিরন্তর পরিশ্রম করে গিয়েছেন। মেধাবী কৌরব পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করেন। ভবিষ্যতে ইংরেজি নিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রশাসনিক পদে কাজ করার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
কৌরব বলে, ভালো ফল হবে আশা ছিল। কিন্তু এতটা হবে ভাবিনি। মা-বাবা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদান সবচেয়ে বেশি। উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় উত্তরবঙ্গে নজর কাড়ল কোচবিহার জেলা। দ্বিতীয় হয়েছেন তুফানগঞ্জ হাইস্কুলের তুষার দেবনাথ। তিনি ৪৯৬ নম্বর পেয়েছেন। অ্যাস্ট্রোফিজিক্স নিয়ে পড়ে মহাকাশ বিজ্ঞানী হতে চান তিনি। জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরের একজন করে তালিকায় ঠাঁই পেলেও নিরাশ করল উত্তর দিনাজপুর জেলা।