নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: মঙ্গলের গভীর রাতে অপারেশন সিন্দুর। পাকিস্তানের ঘরে ঢুকে প্রত্যাঘাত ভারতীয় সেনার। এরপরই উত্তরবঙ্গের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কড়া নজরদারি শুরু করেছে বিএসএফ। তারা সাইকেল, বাইক ও নদীপথে স্পিড বোটে টহল দিচ্ছে। আবার কোথাও সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন উড়িয়ে নজর রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে নেপাল ও ভুটান সীমান্তে এসএসবি এবং প্রতিটি জেলা পুলিস নজরদারি বাড়িয়েছে।
উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ জেলাই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পদ্মাপাড়ে ভারত বিদ্বেষি বিষ ছড়িয়েছে। পাকিস্তানের মদতে চলছে জালনোট, সোনা, গোরু ও মাদক পাচার এবং আগ্নেয়াস্ত্রের কারবার। যা নিয়ে বেশকিছু সীমান্তে বাংলাদেশিরা গোলমাল পাকিয়েছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় পহেলগাঁওতে পাক জঙ্গি সংগঠনের হামলার বদলা নিতে ঝাঁপিয়েছে ভারতীয় সেনা। তারা পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গিঘাঁটি উড়িয়ে দিয়ে এসেছে। বিএসএফ সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার দৈর্ঘ্য ২২১৭ কিমি। যারমধ্যে বিএসএফের উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অধীনে রয়েছে ৯৩২.৩৯ কিমি। মেখলিগঞ্জ থেকে শিলিগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদহের একাংশ রয়েছে। এরমধ্যে ৩০ শতাংশ এলাকা উন্মুক্ত। কিছু এলাকার উপর দিয়ে নদী প্রবাহিত। এরবাইরে মালদহের একাংশ সাউথ বেঙ্গল এবং কোচবিহার একাংশ গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের অধীনে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, অপারেশন সিন্দুর-এর জেরে বাংলাদেশ সীমন্তাবর্তী উত্তরবঙ্গের গ্রামে অশান্তি পাকাতে পারে পাক জঙ্গিরা। তাই কোচবিহার থেকে মালদহ পর্যন্ত প্রতিটি সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। হেঁটে টহল দেওয়ার পাশাপাশি সাইকেল, বাইক ও ছোট গাড়িতে নিয়মিত অভিযান চলছে। নদী পথে স্পিড বোট নিয়ে টহল দেওয়া হচ্ছে। বিএসএফের অফিসাররা জানান, মালদহে ৩০ শতাংশ সীমান্ত এলাকা উন্মুক্ত। সেই এলাকা সহ দক্ষিণ ও উত্তর দিনাজপুরের উন্মুক্ত এলাকায় বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ির পরিস্থিতিও একই। ফাঁসিদেওয়া সীমান্তের চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায় এবং মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি সীমান্তে সন্দেজনক লোক দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছেন বিএসএফ জওয়ানরা। এর পাশাপাশি সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামে এবং প্রতিটি জেলার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়, শহরের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে নাকাতল্লাশি শুরু করেছে পুলিস। তারা নিয়মিত বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগও রেখেছে। হিলি সীমান্ত সহ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাতে ড্রোন সহ সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে বিএসএফ। বাংলাদেশ সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারে ভারতীয় গ্রামগুলিতেও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বিএসএফ। শুধু বাংলাদেশ সীমান্ত নয়, আলিপুরদুয়ারে ভুটান ও শিলিগুড়ির নেপাল সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিস। এসএসবিও সংশ্লিষ্ট সীমান্তগুলিতে টহলদারি ও তল্লাশি অভিযান বাড়িয়েছে। আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিস এসএসবির সঙ্গে সমন্বয় রেখে কুমারগ্রাম, কালচিনি ও মাদারিহাটে আন্তর্জাতিক ভুটান সীমান্তে নাকা চেকিং বাড়িয়েছে। সীমান্তে সন্দেহজনক কোনও ব্যক্তিকে দেখলেই পুলিস তল্লাশি চালাচ্ছে।